• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ২১ সেকেন্ড পূর্বে
জান্নাতুল বিশ্বাস
নড়াইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১৭ মে, ২০২৫, ১০:৩১ রাত

পানি খাওয়া কলডাও খুলে নিয়ে গেছে

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

“আগে অল্প কিছু ভাঙিছেল, আর কালকে রাত্রিরি তালা ভাঙে সবকিছু নিয়ে গেছে। ঘরে আর কোনো জিনিস নেই। পানি খাওয়া কলডাও (টিউবওয়েল) খুলে নিয়ে গেছে। ঘরে থাকা কয়ডা চাল, থালবাটিও নিয়ে গেছে। যা করিছে, তা মাইনষির সাথে মাইনষি করে না।”

গতকাল শুক্রবার দুপুরে কথাগুলো বলছিলেন নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বাবরাহাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের বৃদ্ধা রাশেদা বেগম। রাশেদার অভিযোগ, এলাকার প্রতিপক্ষ মিলন পক্ষের লোকজন গত বৃহস্পতিবার তাঁর বাড়িতে হামলা চালিয়ে এসব ঘটিয়েছে। এখন তিনি কোথায় থাকবেন, কি খাবেন - তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাঁর।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১১ এপ্রিল কাঞ্চনপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মিলন মোল্যা পক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান পিকুল শেখ ও আফতাব মোল্যা পক্ষ। এতে পিকুল পক্ষের ফরিদ মোল্যা (৫০) নিহত হন। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষ মিলনদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। এরপর আসামি পক্ষের লোকজনদের ঘরবাড়ি ঘরবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে ওইদিন রাতেই।

এ ঘটনায় আফতাব পক্ষের লোকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়। পাল্টাপাল্টি মামলার পর এলাকা যখন উত্তপ্ত, তারই মাঝে গত ২৯ এপ্রিল ফরিদ হত্যা মামলার ১৮ নম্বর আসামি রফিকুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার হয় প্রতিপক্ষ আফতাব পক্ষের একজনের বাড়ির পাশ থেকে। পরে রফিকুলকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে আফতাব পক্ষের লোকজনকে অভিযুক্ত করে আরেকটি মামলা করেন তাঁর মা। এরপর আসামি পক্ষের লোকজনদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে ওঠে প্রতিপক্ষ মিলনদের লোকজনের বিরুদ্ধে।

যে-সব বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে, তাঁর মধ্যে রাশেদা বেগমের বাড়ি রয়েছে। তাঁর বাড়িতে দুই দফায় ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘রফিকুলের মরদেহ উদ্ধারের পরপর তাঁর বাড়িটি অল্পস্বল্প ভাঙলেও এবার তাঁর বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে।’

আফতাব পক্ষের লোকজনের অভিযোগ, ‘প্রতিপক্ষ রফিকুলের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আফতাব পক্ষের লোকজনের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে রফিকুলে মা। এছাড়া এই কয়দিনে আফতাব পক্ষের অন্তত ৩০ টি পরিবারের ঘর-বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে মিলন পক্ষের লোকজন। গত চারদিনেই আফতাব পক্ষের রাশেদা বেগম, রেবেকা বেগম, শাহাদাত শেখ, আশরাফ মোল্যা, ফারুক মোল্যা, ফিরোজ মোল্যা,খলিল মোল্যাসহ অন্তত ৮-৯ টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন।’

তাঁদের অভিযোগ, ‘রফিকুলের মরদেহ উদ্ধাররের পর আফতাব পক্ষের রাশেদাসহ কয়েকজনের বাড়িতে দুই দফায় হামলা করেছে মিলন পক্ষের লোকজন। এসময় পানি খাওয়ার টিউবওয়েল ও মটর খুলে নিয়ে গেছে, পুকুরের মাছ পর্যন্ত মেরে নিয়ে গেছে। যাওয়ার এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।’

আফতাব পক্ষের রেবেকা বেগম বলেন, “গতকালকে ওরা (প্রতিপক্ষ) আমার বুকে ভেলা (দেশীয় অস্ত্র) ধরে বলেছে বাড়ি থেকে নাম। ভয়ে বাড়ি থেকে আমি বের হয়ে গেছি। এরপর আমার ঘরবাড়ি ভাঙচুর করিছে। ঘরে মালামাল যা ছেলে, সব নিয়ে গেছে। পুকুরের মাছও ধরে নিয়ে গেছে। বাড়িতে একটু পানি খাওয়ার মত পরিবেশও নেই। টিউবওয়েলও খুলে নিয়ে গেছে, বাথরুমটাও ভেঙে চুরমার করে থুইয়ে গেছে। এখন এই বাড়িতে থাকার কোনো পরিবেশ নেই। পরের বাড়িতে খাচ্ছি।”

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করছেন প্রতিপক্ষ মিলন মোল্যার লোকজন। তাঁদের দাবি, “মারামারিতে ফরিদ মারা যাওয়ার পর আফতাবদের লোকজন আমাদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করেছিল, আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। এর কিছুদিন পর আফতাব পক্ষের একজনের বাড়ির পাশ থেকে আমাদের রফিকুলের মরদেহ উদ্ধার হয়। এঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে রফিকুলে মা বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। রফিকুলের মরদেহ উদ্ধারের পর আফতাব পক্ষের লোকজন নিজেরাই নিজেদের বাড়ি থেকে মালামাল সরিয়েছে। তাঁদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর বা লুটপাট আমাদের কেউ করে নি। তাঁদেরকে আমাদের কেউ হুমকিও দিচ্ছে না। তাঁদের করা অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন।”

আজ শনিবার দুপুরে কালিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন মুঠোফোনে বিডি২৪লাইভকে বলেন, “কাঞ্চনপুরের ঘটনাগুলোতে একাধিক মামলা হয়েছে, সেগুলোর তদন্ত চলছে। এছাড়া কোনো অভিযোগ আসলে যাচাই-বাছাই করে তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ওই এলাকার পরিবেশ বর্তমানে ভালো আছে।”#

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com