
মেঘনা নদীতে বালু মহালের ইজারা বাগাতে এক সেনা সদস্যকে অপহরণ ও মারধরের ঘটনায় বরিশাল বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ ১২ নেতার পদ স্থগিত হয়েছে।
ছয় মাসের জন্য তাদের প্রাথমিক পদসহ সকল পদ স্থগিতের মাধ্যমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে দল। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ মে) বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত নোটিশ শাস্তিপ্রাপ্ত নেতাদের পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) আকন কুদ্দুসুর রহমান।
পদ স্থগিত হওয়া নেতারা হলেন, বরিশালের হিজলা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট দেওয়ান মো. মনির হোসেন, বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাহফুজুল আলম মিঠু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব কামরুল হাসান, মহানগর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নূর হোসেন সুজন, বরিশাল মহানগরের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সদস্য সচিব মো. জাহিদ, বরিশাল মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মশিউর রহমান মঞ্জু, বরিশাল মহানগর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুদ রাড়ি, বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সদস্য ইমরান খন্দকার, বরিশাল মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন, যুবদল নেতা রুবেল ও ফাহিম।
পদ স্থগিত হওয়া সকলের চিঠিতে একইভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, আপনার বিরুদ্ধে বরিমালে বালুমহালের দরপত্র নিয়ে এক সেনা সদস্যকে মারধর ও মালামাল ছিনিয়ে নেয়ার মতো হিংসাত্মক ও জোরজবরদস্তি মূক ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ রয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড দলীয় শৃঙ্খলার চরম পরিপন্থি। আপনাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রেক্ষিতে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে গঠনতন্ত্র মোতাবেক বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ আগামী ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হলো।
বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পদ স্থগিত হয়েছে। জড়িতরা দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকায় লঘু শাস্তি দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত ২৪ মার্চ রাতে ঘটনার পর এই ১২ জনের পদ তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছিল। এরপর জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী আলালকে একমাত্র সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে নতুন করে এবার ৬ মাসের জন্য পদস্থগিত করা হয়েছে। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত পদস্থগিতের চিঠি ইতোমধ্যে জড়িতদের কাছে পৌঁছানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ দুপুরে বরিশাল জেলায় ছয়টি বালুমহাল ইজারা দেওয়া হয়। হিজলা উপজেলা সংলগ্ন মেঘনার বালুমহালের ইজারা বাগাতে এই বিএনপি নেতারা মিশনে নেমেছিলেন। তাদের এড়িয়ে দরপত্র জমা দেয় কাজী আব্দুল মতিন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিএনপি নেতারা মতিনের ভাতিজা সেনা সদস্য আবু জাফরকে জেলা প্রশাসকের দপ্তরের সামনে মারধর করে একটি রেস্ট হাউজের কক্ষে নিয়ে আটক করে রাখেন।
খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে অপহৃত সেনা সদস্যকে উদ্ধার। তখন দেওয়ান মনির হোসেন, নূর হোসেন সুজন ও ইমরান খন্দকারকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর