
যশোর শহরে পালিত মাদকাসক্ত ছেলের হাতে খুন হয়েছেন সুলতানা খালেদা সিদ্দিকা রুমি (৬০) নামের এক নারী। নিহত খালেদা শহরের মনিহার ফলপট্টি এলাকার মৃত শেখ শাহজাহানের স্ত্রী।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মাদকাসক্ত পালিত পুত্র শেখ শামস বিন শাহজাহান (১৯) তাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। ঘটনাটি ঘটে আজ শুক্রবার (২৪ মে) রাত ২টা থেকে দুপুর ৩টার মধ্যে।
নিহতের ভাড়াটিরা জানান, রাত আনুমানিক ২টার দিকে রুম থেকে চিৎকার ও বাকবিতণ্ডার শব্দ পান। এরপর দুইজনেই নিশ্চুপ হয়ে যান। সন্দেহ হলে শনিবার দুপুর ৩টার দিকে তিনি জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করলে যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
এসআই জাহাঙ্গীর আলম স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে ভিকটিমের ঘরের দরজা খোলার অনুরোধ করলে আসামি শামস দরজা খুলে দেন। তার দেখানো মতে পুলিশ ঘরে ঢুকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে এবং মরদেহ যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকেই শেখ শামসকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
জানা গেছে, খালেদা-শাহজাহান দম্পতি নিঃসন্তান ছিলেন। ১৯ বছর আগে কুমিল্লা থেকে তিন মাস বয়সী শামসকে দত্তক নেন তারা। তবে গত চার-পাঁচ বছর ধরে শামস মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে এবং প্রায়ই মায়ের কাছে টাকা চাইত। টাকা না দিলে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করত বলেও প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন।
এলাকাবাসী জানান, খালেদার কোনো সন্তান নেই। দত্তক নিয়ে শামসকে বড় করেছে। সে-ই তিন মাস বয়স থেকে ছেলের মতো করে মানুষ করেছে। শহরের সবচেয়ে নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দাউদ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়িয়েছে। নেশাগ্রস্ত হওয়াতে ক্লাস নাইনের পর সে আর পড়াশোনা করেনি। তারপরও শামসকে অনেক ভালোবাসত খালেদা। এমনকি এই মার্কেট তার নামে লিখে দিয়েছে। তারপরও সে জঘন্য কাজটি করল তার মায়ের সাথেই।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, নেশার টাকার জন্যই বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে খালেদা সিদ্দিকাকে পিটিয়ে হত্যা করে পালিত ছেলে শামস।
এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাত জানান, হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর