
ঢাকার অপরাধজগতের ত্রাস, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। আজ মঙ্গলবার সকালে কুষ্টিয়া শহরের কালিশংকরপুর এলাকায় তিন ঘণ্টার এক শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে সহযোগীসহ তাঁকে আটক করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে দুজন আটক হয়েছেন। এর মধ্যে একজন সুব্রত বাইন। যদিও কুষ্টিয়া ক্যাম্পের দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেননি।
ঢাকা থেকে যাওয়া সেনাবাহিনীর একটি দল কুষ্টিয়া শহরের কালিশংকরপুর এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালায়। আজ সকাল ১০টার দিকে পৌর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কালিশংকরপুর সোনার বাংলা মসজিদ সড়কে গিয়ে দেখা যায়, মীর মহিউদ্দিনের মালিকানাধীন তিনতলা ভবনের সামনে এলাকাবাসীর ভিড়। সবার মধ্যে চাপা গুঞ্জন চলছে। গণমাধ্যমকর্মীদের দেখে অনেকেই স্থান ত্যাগ করেন। যাঁরা দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাঁরাও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
সেখানে রবিউল ইসলাম নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ফজরের নামাজের সময় তিনি রাস্তায় সেনাবাহিনীর চারটি গাড়ি দেখতে পান। মীর মহিউদ্দিনের বাড়ি ঘিরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা দাঁড়িয়ে ছিলেন। জানতে চাইলে তাঁরা জানান, ছাত্রদের মেসে অভিযান চলছে। এরপর ওই বাড়ি থেকে দুজনকে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
কালিশংকরপুর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রায় দেড় মাস আগে কালিশংকরপুর সোনার বাংলা সড়ক এলাকার মৃত মীর মহিউদ্দিনের তিনতলা বাড়ির নিচতলায় ভাড়া থাকতেন দুই ব্যক্তি। স্থানীয় এক যুবক তাঁদের বাড়ি ভাড়া নিতে সহযোগিতা করেন। নিচতলা ভাড়া নেওয়ার পর থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা দরজা-জানালা খুলতে দেখেননি। ভবনের দ্বিতীয় তলায় ছাত্রাবাস। আজ ভোরের দিকে বাড়ির তালা ভাঙার শব্দ পেয়ে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। তাঁরা দেখতে পান, সেনাবাহিনীর সদস্যরা বাড়িটি ঘিরে অভিযান চালাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর দুজনকে আটক করে সেনাবাহিনীর গাড়িতে তোলা হয়। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা জানতে পারেন, এই বাড়িতেই ভাড়া থাকতেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও তাঁর সহযোগীরা। এরপর থেকে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ছাত্রাবাসে থাকা ইমন নামের এক শিক্ষার্থী জানান, ভোরের দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ছাত্রাবাসে এসে সবাইকে এক জায়গায় জড়ো করেন। একটি কক্ষের ভেতর ১৮ জনকে রেখে বলা হয়, অভিযান চলছে। এরপর নিচতলা থেকে দুজনকে নিয়ে যায়।
তবে এ বিষয়ে জানে না স্থানীয় থানা-পুলিশ। জানতে চাইলে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমিও শুনেছি। তবে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এ ব্যাপারে কথা বলেননি।’
উল্লেখ্য, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনকে ধরতে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি রয়েছে। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তাঁকে ধরিয়ে দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। পুরস্কার ঘোষিত ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর অন্যতম ছিলেন সুব্রত বাইন।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর