• ঢাকা
  • ঢাকা, বুধবার, ০৪ জুন, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৫ ঘন্টা পূর্বে
রফিকুল ইসলাম
বান্দরবন প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৮ মে, ২০২৫, ০৪:২৯ দুপুর

লামা পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই দিতে হয় টোল

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

বিক্রিত পশুর উপর বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি টোল দিতে হয় লামা বাজারে পশুর হাটে। এখানে পশুর বিক্রয় মূল্যের উপর ক্রেতাকে ২ শতাংশ এবং বিক্রেতা ২ শতাংশ মোট ৪ শতাংশ টোল দিতে হয়। 

এতে করে দুর্বিষহ অবস্থায় পড়তে হয় পশু ক্রয়-বিক্রয় করতে আসা লোকজনকে। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ও লামা পৌরসভার দ্বৈত টোলের বিষয়ে গত ২ দশক থেকে বলে আসলেও কোন সুরাহা হয়নি। টোলের নামে গলা কাটা হচ্ছে সাধারণ মানুষের।

লামা বাজারে জেলা পরিষদ কর্তৃক টোল আদায়কারীর সাথে কথা বলে জানা যায়, জেলা পরিষদের ইজারাদার পশু বিক্রির উপর ২ শতাংশ টোল আদায় করেন। একই বাজারে ২০০৪ সাল থেকে টোল আদায় করছে লামা পৌরসভা।

লামা পৌরসভার ইজারাদার একই পশুর উপর আরো ২ শতাংশ টোল আদায় করছে। এতে করে একটি পশু বিক্রি করলে ক্রেতা লামা পৌরসভাকে ২ শতাংশ ও বিক্রেতা জেলা পরিষদকে ২ শতাংশ মোট ৪ শতাংশ টোল দিতে হয়। প্রতি লাখে ৪ হাজার টাকা টোল দিতে হয়।

মঙ্গলবার লামা বাজারে আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে পশু বিক্রি করতে আসা শামসুল ইসলাম, মোবারক আলী ও নুরুন্নাহার বেগম সহ অনেকে বলেন, টোলের নামে লামা বাজারে জুলুম করছে। বাংলাদেশের কোথাও এত টোল আদায় হয়না। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ও লামা পৌরসভা একই পশুর উপর দুইবার টোল নেয়। এই জুলুম বন্ধ করা উচিত।  

এদিকে রপ্তানি পণ্যের উপরও দ্বৈত কর আরোপ করায় দিশেহারা লামা ও আলীকদম উপজেলার কৃষক। একই কৃষিপণ্য থেকে জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ পৃথকভাবে তিনবার কর নেয় বলে জানিয়েছেন সাধারণ কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।

এছাড়া পণ্যের উপর ধার্যকৃত টোল এর পরিমাণ অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন তারা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে দ্বৈত কর ও ধার্যকৃত টোলের হার বেশি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে জনসাধারণ। গত দুই দশক ধরে এ সমস্যা নিয়ে অনেক দেনদরবার হলেও কোন সমাধান হয়নি।

লামার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের শিলেরতুয়া, অংহ্লা পাড়ার কৃষক রমজান আলী, ওসমান গনি ও মো. সোহেল বলেন, অনেক কষ্ট করে ফসল উৎপাদন করে বাজারে বিক্রি করতে গেলে প্রথমে ইউনিয়ন পরিষদ পরে লামা পৌরসভাকে টোল দিতে হয়। যদি এসব ফসল চকরিয়া বা দেশের অন্যত্র কোথাও নিতে হলে জেলা পরিষদ টোল নেয়। এক পণ্যের উপর তিনবার কর দিতে গিয়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।

আলীকদম চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের ব্যবসায়ী মমতাজ মিয়া জানান, ইউনিয়ন পরিষদে টোল দেয়ার পরেও রেপারপাড়া বাজারস্থ উপজেলা পরিষদ গেইটে টোল দিতে হয়। এছাড়া আলীকদম থেকে দেশের অন্যত্র মালামাল নিতে গেলে জেলা পরিষদকে টোল দিতে হয়। একাধিকবার টোল দিতে গিয়ে আমরা সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছি।

কৃষকরা অভিযোগ করেন, পণ্যের উপর অতিরিক্ত টোল ধার্য করা হয়েছে। এক ছড়া কলা থেকে ৫ টাকা, প্রতি পিস কাঁঠাল থেকে ৫ টাকা, ১টি পাহাড়ি গরু থেকে ৫০০ টাকা, প্রতি মণ মরিচ ও কাঁচা সবজি থেকে ১৫ টাকা, প্রতি মণ তামাক থেকে ৪৫ টাকা হারে টোল নেয়া হচ্ছে। প্রতিটি পণ্যে থেকে টোল এর নামে সাধারণ মানুষের গলা কাটা হচ্ছে। কৃষিপ্রধান দেশ হয়েও কৃষকের উপর এই জুলুম মেনে নেয়া যায় না। কোথাও বলে আমরা প্রতিকার পাচ্ছি না।

স্থানীয় সরকার বিভাগের অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার গত ১৩/১/২০১১ তারিখে সিদ্ধান্ত মতে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ সমূহ রপ্তানি পণ্যের টোল আদায় ও ইজারা প্রদান করবেন। সভায় রপ্তানি পণ্যের টোল ও ইজারালব্ধ আয় বণ্টনের হিস্যা পুনবন্টন করা হয়।

তাতে বলা হয়, পৌর এলাকার মধ্যে ইজারালব্ধ আয় বাজার ফান্ড ৪০%, পৌরসভা ৪০% উপজেলা ২০% পাবে। পৌর এলাকার বাহিরে আঞ্চলিক পরিষদ ১০%, অবশিষ্ট ৯০% কে ১০০% ধরে জেলা পরিষদ ৫৫%. উপজেলা পরিষদ ৪৫% বণ্টন করা হবে। উপজেলা পরিষদ প্রাপ্ত হিস্যা হতে ইউনিয়ন পরিষদ সমূহে সমন্বয় করার কথা থাকলেও তার করা হয়না বলে জানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যানরা।  

এদিকে দ্বৈত কর আরোপের বিষয়টি বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ অবহিত হলে গত ২৭ এপ্রিল ২০২৫ইং তারিখে ২৯.৩৫.০৩০০.০০৩. ৪২.০৫৮.২৫.৭১৯ নং স্মারকের এক পত্রে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই আলীকদম উপজেলা পরিষদের টোল আদায় কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। অফিস আদেশ দিলেও তা মানছে না আলীকদম উপজেলা পরিষদের রেপারপাড়া বাজারস্থ টোল আদায় পয়েন্টটি।

আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রশাসক আলীকদম উপজেলা পরিষদ আব্দুল্লাহ আল মুমিন বলেন, টোল আদায় কার্যক্রমের বিষয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্দেশনা অনুসরণ করা হবে। 

পশু ও কৃষি পণ্যের দ্বৈত কর আদায়ের বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মঈন উদ্দিন বলেন, দ্বৈত কর এর বিষয়ে আমাকে কেউ অবহিত করেনি। টোল নিয়ে খামারি ও কৃষককে হয়রানি না করতে অনুরোধ করেন। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com