বৈরী আবহাওয়ার কারণে বরিশাল থেকে অভ্যন্তরীণ সব রুটে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে বরিশাল-ঢাকা রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলও বন্ধ রাখা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকেও বরিশালজুড়ে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্রে জানা যায়, বৈরী আবহাওয়া ও নদীবন্দরে সতর্কতা সংকেত চলমান থাকায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের কারণে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।

২ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি থাকায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সকালে বরিশালের ১০টি অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়। বিকেলে ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চ চলাচলও বন্ধ ঘোষণা করা হয়। নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় ভোলা, মেহেন্দীগঞ্জসহ বিভিন্ন নৌপথের যাত্রীরা বিশেষভাবে দুর্ভোগে পড়েছেন। বিশেষ করে ভোলার সঙ্গে সড়কপথে সরাসরি যোগাযোগ না থাকায় সেখানে যাত্রীদের দুর্ভোগ বেশি হচ্ছে।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপপরিচালক ও বরিশাল নদীবন্দরের কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম রেজা বলেন, ‘পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বরিশাল নদীবন্দর থেকে কোনো ধরনের নৌযান ছেড়ে যাবে না।’

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের কীর্তনখোলা, তেঁতুলিয়া, বিষখালী, পায়রা, বলেশ্বর, মেঘনা, ডাকাতিয়া, আড়িয়ালখাঁ নদ-নদীসহ বিভিন্ন জায়গায় উঁচু জোয়ার প্রবাহিত হচ্ছে। অধিকাংশ নদীতে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে জোয়ার বইছে। এর ফলে বরিশাল নগরসহ দক্ষিণাঞ্চলের চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নদীর তীরবর্তী অনেক এলাকায় পানি ঢুকে পড়ায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে এবং চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল সকাল ৯টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত বরিশালে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে আজ সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে ৯ মিলিমিটার। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বরিশালে বৈরী আবহাওয়া ও থেমে থেমে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।

বরিশাল আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, গভীর নিম্নচাপটি গত রাতেই দেশের স্থলভাগ অতিক্রম করলেও এর প্রভাবে এখনো বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে এবং সারা দিনই বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। নদীবন্দরগুলোতে ২ নম্বর এবং সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত বহাল রয়েছে।