
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে একদল বন্যহাতি রাতব্যাপী তান্ডব চালিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষক্ষতি করেছে। হাতির আক্রমণ থেকে জানমাল রক্ষা করতে পাহাড়ঘেঁষা গ্রামের মানুষ বসতবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে। বন্যহাতির টানা আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ।
শুক্রবার (৩০ মে) উপজেলার সীমান্তবর্তী পোলাগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি টিলাপাড়া গ্রামে খাবারের সন্ধানে একদল বন্যহাতি রাতব্যাপী ব্যাপক তান্ডব চালয়। এ সময় ৬০/৭০ টি বন্যহাতির দল বসতবাড়িতে ঢুকে ঘরবাড়ি ভেঙে ধান চাল খেয়ে সাবার করে।একই সাথে গাছের কাঁঠাল ও বাড়ির আঙিনায় রোপিত কলা গাছ খেয়ে শেষ করেছে। এমনকি ঘরে রাখা ধানচাল ও আসবাবপত্র তছনছ করেছে বন্যহাতির দল। শুক্রবার রাতে বাতকুচি গ্রামে কমপক্ষে ৮/১০ টি পরিবারে তান্ডব চালিয়ে বসতবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি করেছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, অতি সম্প্রতি বোরো আবাদ শেষ হয়েছে। হাতিগুলো এখন ধান খেতে পারে না। এখন তারা ঘর বাড়িতে হানা দিচ্ছে। একই সাথে ঘরে সংরক্ষিত ধান চাল খেয়ে শেষ করছে। বর্তমানে বৃষ্টি থাকার কারণে গ্রামবাসী হাতি তারাতে পারছে না। কিংবা হাতি তাডতে গেলে বন্যহাতি তেড়ে এসে মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে বাতকুচি গ্রামের বাসিন্দা ছুরতন নেছা (৬৫) নামের এক বিধবা নারী হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে নিহত হয়েছেন। আগে পাহাড়ঘেঁষা বাড়িঘরে হামলা করলেও এখন গ্রামের
ভেতর চলে আসছে বন্যহাতি।
এদিকে, বন্যহাতি এখন গ্রামে ঢুকে হামলা করার কারনে উপজেলার উত্তর পলাশীকুড়া গ্রামের মানুষ সবাই মিলে বাড়ির আঙ্গিনার ছোটবড় গাছপালা কেটে ফেলেছে। তারা দলবেঁধে রাত জেগে বন্যহাতি পাহাড়া দিচ্ছে।
উপজেলার বাতকুচি টিলাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আয়নাল হক বলেন, হাতি তাড়ানোর জন্য
আমাদের পর্যাপ্ত ডিজেল ও সার্চ লাইট নেই। তিনি বলেন, হাতি আমার পাশের বাড়ির বৃদ্ধা নারীকে শুঁড় দিয়ে পেচিয়ে আছাড় মেরে হত্যা করেছে। আমরা এখন আতংকের মধ্যে আছি। একদিকে বৃষ্টি আর অন্যদিকে অন্ধকার রাতে হাতির ভয়ে রাত কাটছে। আমাদের
এলাকায় যেন প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।
জানতে চাইলে ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা দেওয়ান আলী বলেন, বন্যহাতি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে সরকার নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। একই সাথে আমরা হাতি ও মানুষ উভয়কে রক্ষা করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববিবলেন, বন্যহাতি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম পরিদর্শনে যাচ্ছি। তাদেরকে তাৎক্ষণিক
কিছু সহযোগিতা করা হবে। এছাড়া বন বিভাগের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তরা আবেদন করলে তাদেরকে সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর