মৌলভীবাজারের জুড়ীতে মাতৃত্বকালীন ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রাইম ব্যাংকের এজেন্ট সাব্বির আহমেদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় মহিলা বিষয়ক অফিসের এক কর্মকর্তার যোগসাজশের অভিযোগও করেছেন ভুক্তভোগীরা। ভাতা আত্মসাতের অভিযোগে বেশ কিছুদিন ধরে ভুক্তভোগী নারীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করছেন।

ভুক্তভোগী নারীদের অভিযোগ, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের ‘মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি’র আওতায় তারা মাতৃত্বকালীন ভাতা পেতেন। প্রতি মাসে ৮০০ টাকা করে তাদের মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই টাকা আসার কথা ছিল।

ভুক্তভোগীরা জানান, গত বছর মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য তালিকাভুক্ত হওয়ার পর তারা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে ফরম জমা দেন। সেখানে সাব্বির আহমেদ নামের এক ব্যক্তি তাদের কাছ থেকে কাগজপত্র নেন এবং প্রাইম ব্যাংকের এজেন্ট শাখায় অ্যাকাউন্ট খুলতে বলেন। পরবর্তীতে তাদের অ্যাকাউন্টে ভাতার টাকা এলেও সাব্বির সেই টাকা দিতে টালবাহানা শুরু করেন। কয়েকজনকে কিছু টাকা দেওয়ার পর তিনি জানান, হ্যাকাররা অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিয়েছে। এই অজুহাতে সাব্বির লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা হয়ে যান বলে অভিযোগ নারীদের।

ভুক্তভোগীরা প্রতিকার চেয়ে প্রাইম এজেন্ট ব্যাংক, মহিলা বিষয়ক অফিস ও সাব্বিরের কাছে ধরনা দিয়েও কোনো সমাধান পাননি। এরপর তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ শুরু করেন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাব্বির আহমেদ সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন। তিনি দাবি করেন, গ্রাহকদের টাকা হ্যাকাররা নিয়েছে, এতে তার কিছু করার নেই।

মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মকর্তা মোঃ সুজাউদ্দৌলা জানান, সাব্বির আগে ওই অফিসে খণ্ডকালীন হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তবে তিনি এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তিনি কোনো কথা বলতে পারবেন না।

প্রাইম ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির সহকারী পরিচালক ফ্লোরা ইয়াসমিন জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাবলু সূত্র ধর জানান, সাব্বিরের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলার মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে। ভুক্তভোগী নারীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সালাউদ্দিন/সাএ