
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার উত্তর ঝাটিবুনিয়া গ্রামের কৃষক সোহাগ মৃধা। গত ছয় বছর ধরে তিনি লালন-পালন করে বড় করে তুলেছেন একটি ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়। ভালোবেসে যার নাম দিয়েছেন ‘কালো মানিক’। ঈদুল আজহার আগে সেই আদরের কালো মানিককে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উপহার দিতে চান সোহাগ।
বুধবার (৪ জুন) দুপুরে কৃষক সোহাগ মৃধা নিজেই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
খোজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় ৩৫ মণ ওজনের, ১০ ফুট লম্বা ও ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতার বিশাল এই ষাঁড়টি দেখে মুগ্ধ এলাকাবাসী। কুচকুচে কালো রঙের জন্যই ‘কালো মানিক’ নামে ডাকা হয় তাকে। ষাঁড়টির পেছনে এক সময় ১০ লাখ টাকা দাম উঠলেও বিক্রি করেননি সোহাগ। এবার নিজ উদ্যোগে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে বেগম জিয়ার হাতে তুলে দিতে চান কালো মানিককে।
এ জন্য ভাড়া করা হয়েছে তিনটি মিনি ট্রাক। সঙ্গে থাকবে ব্যানার, বাজনার দল ও খাস প্রস্তুতকৃত টি-শার্ট পরা সঙ্গীরা। চলছে সাজ-সজ্জার তোড়জোড়ও। সোহাগ বলেন, ‘বিএনপির প্রতি ভালোবাসা থেকেই নেত্রীকে আমার প্রিয় ষাঁড়টি উপহার দিতে চাই। ভাইরাল হওয়ার কোনো ইচ্ছা নাই।
২০১৮ সালের শেষ দিকে মাত্র ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকায় একটি গাভি কিনে যাত্রা শুরু করেন সোহাগ। সপ্তাহ না যেতেই গাভিটি জন্ম দেয় একটি বাছুরের, এই বাছুরই আজকের ‘কালো মানিক’। এরপর দীর্ঘ ছয় বছর ধরে পরিবারের সদস্যদের ভালোবাসা আর যত্নে বড় হয়ে ওঠে ষাঁড়টি।
এ বিষয়ে কৃষক সোহাগ বলেন, ‘আমি কালো মানিককে অনেক কষ্ট করে গত ছয় বছর পর্যন্ত লালন-পালন করেছি। আমি কোন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না তবে বিএনপির কার্যক্রম আমার ভালো লাগে এবং নেত্রী হিসেবে বেগম খালেদা জিয়াকে আমি ভালোবাসি। তাই এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমার এই শখের গরুটিকে কোরবানি উপলক্ষে তাকে উপহার হিসেবে পাঠাবো।’
সোহাগের মা হাজেরা বেগম বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমার ছেলে বিএনপিকে ভালোবাসে। বাবার মৃত্যুর পর সামান্য জমিতে চাষাবাদ করে সংসার চালায়। চৈতা বাজার থেকে সোহাগ এই কালো মানিকের মাকে প্রায় দেড় লাখ টাকা দিয়ে কিনে আনার কিছুদিন পরেই কালো মানিকের জন্ম হয়। ওর গ্রোথ ভালো থাকায় অনেক আদর যত্নে গরুটিকে সোহাগ লালন পালন করছে। কয়েক বছর ধরে বলতেছে ষাঁড়টি বেগম জিয়াকে উপহার দেবে।’
এ সময় সোহাগ আরও বলেন, 'আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার সময় ঢাকার উদ্দেশে রওনা করবো ইনশাআল্লাহ। ইতোমধ্যে ট্রাক ভাড়া করা এবং ব্যান্ডপার্টি ঠিক করা থেকে শুরু করে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।’
আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, সোহাগ একজন সাধারণ কৃষক এবং নিবেদিতপ্রাণ দলীয় কর্মী। ষাঁড় উপহার দেওয়ার বিষয়টি শুরুতে অনেকেই বিশ্বাস করেনি, তবে সোহাগের ইচ্ছা ছিল। এখন তার এই উপহার দেওয়ার বিষয়টি অনেকেই জানে।’
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সিনিয়র সদস্য পটুয়াখালী জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মজিবুর রহমান টোটন বলেন, ‘একজন প্রান্তিক কৃষকের এমন ভালোবাসাই প্রকাশ করে, আমাদের নেত্রী দেশবাসীর কাছে কতটা জনপ্রিয়। কতটা ভালোবাসলে একজন কৃষক তার শখের প্রাণীটিকে নেত্রীকে উপহার পাঠাতে চান। এমন একজন আপোষহীন নেত্রী পেয়ে আমরা গর্বিত।’
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর