
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ১৯৮তম ঈদুল আজহার জামাত। সকাল ৯টায় জামাত শুরু হবে। এতে ইমামতি করবেন শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের প্রধান ইমাম ও বড় বাজার জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। বিকল্প ইমাম হিসেবে থাকবেন হয়বতনগর এ ইউ কামিল মাদরাসার প্রভাষক মাওলানা জুবায়ের ইবনে আব্দুল হাই। নারীদের জন্য সকাল ৮টায় সূর্যবালা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আলাদা জামাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পুলিশ ও র্যাব জানিয়েছে, শোলাকিয়া ঈদগাহে কোনো ধরনের নাশকতার আশঙ্কা নেই।
শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান জানান, সারা দেশ ও বিদেশ থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ঈদের নামাজে অংশ নিতে আসবেন। তাদের জন্য আজিমউদ্দিন উচ্চবিদ্যালয় ও বাগে জান্নাত নুরানি মাদ্রাসায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দূর থেকে আসা মুসল্লিদের জন্য সুপেয় পানি, অজু ও পর্যাপ্ত ওয়াশরুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুসল্লিদের স্বাস্থ্যসেবার জন্য মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ দায়িত্ব পালন করবেন। দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, মুসল্লিদের জন্য ‘শোলাকিয়া এক্সপ্রেস’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব ও ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ লাইনে ট্রেন দুটি চলাচল করবে। শোলাকিয়া এক্সপ্রেস-১ ভৈরব থেকে ছাড়বে সকাল সাড়ে ৬টায় এবং শোলাকিয়া এক্সপ্রেস-২ ময়মনসিংহ থেকে ছাড়বে সকাল পৌনে ৬টায়। উভয় ট্রেন কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাবে দুপুর ১২টায়।
ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ সুপার কাজেম উদ্দিন জানান, ঈদ জামাতকে কেন্দ্র করে শোলাকিয়া ঈদগাহ ও আশপাশের এলাকাকে ৭টি সেক্টরে ভাগ করে ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী ও জেলা প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করবে। নিরাপত্তার জন্য ৫০টি মেটাল ডিটেক্টর, ৮টি আর্চওয়ে গেইট, ৬৪টি সিসি ক্যামেরা, ৮টি ড্রোন ক্যামেরা ও ৪টি লাইভ ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে। একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। তিনি মুসল্লিদের শুধু জায়নামাজ নিয়ে মাঠে প্রবেশের অনুরোধ জানিয়েছেন।
র্যাব-১৪ এর কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোঃ আশরাফুল কবির জানান, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্ট্রাইকিং ও রিজার্ভ ফোর্স মোতায়েন থাকবে। মহাসড়কে মোবাইল টিম টহল দেবে। সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে গুজব ও উস্কানিমূলক কিছু ছড়াতে না পারে, সেজন্য সাইবার মনিটরিং সেল কাজ করছে। ওয়াচ-টাওয়ারে স্বয়ংক্রিয় স্নাইপার রাইফেল থাকবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকিত সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল ইসলাম তালুকদার, শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ এরশাদ মিয়া এবং কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।
সর্বশেষ খবর