
কক্সবাজারের রামুতে নিজস্ব ‘ছায়া-রাষ্ট্র’ তৈরি করা শাহীনুর রহমান ওরফে শাহীন ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল ১০টার দিকে রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের জাউচপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সেনাবাহিনীর ঝিলংজা ক্যাম্পের কর্মকর্তারা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শাকের মেম্বারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শাহীনকে আটক করা হয়েছে।
র্যাব-১৫ ও কক্সবাজার জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শাহীনের বিরুদ্ধে ১৯টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৯টি ডাকাতি, ৪টি হত্যা, ২টি অস্ত্র, ২টি মাদক এবং আরো কয়েকটি সাধারণ ডায়েরি বিভিন্ন থানায় করা হয়েছে। গত ২৫ মে যৌথ বাহিনীর অভিযানে তার ডেরা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, মাদক, জাল টাকা ও ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, শাহীন ও তার বাহিনী সীমান্ত দিয়ে আসা গরু এবং চোরাচালান পণ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ করত। প্রতিদিন ৫০০ থেকে ১ হাজার গরু থেকে ৩ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করত তারা। ইয়াবা, আইস, বিদেশি সিগারেটসহ চোরাচালান পণ্যের করিডোরও তার নিয়ন্ত্রণে ছিল।
রামুর গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে শাহীনের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, সেখানে আইন নয়, চলত শাহীনের আদেশ। তার অনুমতি ছাড়া কেউ কোনো কাজ করতে পারত না।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, শাহীন বহু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। গরু ও মাদক পাচারে কেউ বাধা দিলে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হতো। ২০২৩ সালের ৩ মার্চ ইরফান এবং ২০২৪ সালের ১৬ মার্চ আবু তালেব ও ৮ মে আবুল কাশেমকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
স্থানীয়রা জানান, শাহীনের উত্থান একটি ধনাঢ্য পরিবার থেকে। জমিদার হাজী ইসলামের সন্তান শাহীন একসময় পড়ালেখা করলেও পরবর্তীতে অপরাধের পথে পা বাড়ান। ঈদগড়ের কুখ্যাত ডাকাত কালু ও কলিমুল্লাহর অনুসারী হয়ে প্রথমে ডাকাতি এবং পরে নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী তৈরি করেন।
শাহীন ডাকাতের গ্রেফতার হওয়ায় স্থানীয়রা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তবে তারা এই অপরাধ সাম্রাজ্যের পেছনের রাজনৈতিক আশ্রয়দাতা, অর্থদাতা ও প্রশাসনিক সহযোগীদেরও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর