
কিশোরগঞ্জ: আজ শনিবার কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল আজহার ১৯৭তম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৯টায় শুরু হওয়া জামাতে ইমামতি করেন শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের গ্রান্ড ইমাম মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ।
ঐতিহ্য অনুযায়ী, জামাত শুরুর আগে বন্দুকের ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। জামাত শুরুর ১০ মিনিট আগে তিনটি, ৫ মিনিট আগে দুইটি এবং ১ মিনিট আগে একটি গুলি ছুড়ে মুসল্লিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। জামাত শেষে বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বের শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা হয়।
ঈদের জামাতে অংশ নিতে দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা আসেন। মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য রেল কর্তৃপক্ষ ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে। একটি ট্রেন ময়মনসিংহ থেকে এবং অন্যটি ভৈরব থেকে ছেড়ে আসে। জামাত শেষে দুপুর ১২টায় ট্রেন দুটি মুসল্লিদের নিয়ে গন্তব্যের দিকে ছেড়ে যায়।
শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এরশাদ মিয়া জানান, কোরবানি সংক্রান্ত ব্যস্ততার কারণে ঈদুল ফিতরের তুলনায় এই ঈদে মুসল্লিদের উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল।
ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ সুপার (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ফিন্যান্স) মোঃ কাজেম উদ্দিন জানান, জামাত নির্বিঘ্ন করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ওয়াচ টাওয়ার, সিসি ক্যামেরা ও ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে মাঠের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয়। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিজাবে রহমত জানান, দূরের মুসল্লিদের জন্য কিশোরগঞ্জ-ভৈরব ও কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে দুটি বিশেষ ট্রেন চলাচল করেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৭ জুলাই শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে জঙ্গি হামলায় দুই পুলিশ সদস্য, একজন নারী ও একজন জঙ্গি নিহত হন।
জনশ্রুতি আছে, শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ ঈদের জামাতের মোনাজাতে মুসল্লিদের প্রাচুর্যতা বোঝাতে ‘সোয়া লাখ’ কথাটি ব্যবহার করেন। অন্য একটি মতে, সেই জামাতে সোয়া লাখ লোক সমবেত হয়েছিলেন। ফলে ‘সোয়া লাখের’ অপভ্রংশ হয়ে ‘শোলাকিয়া’ নামটি চালু হয়ে যায়। ১৯৫০ সালে স্থানীয় দেওয়ান মান্নান দাদ খাঁ ঈদগাহের জন্য ৪.৩৫ একর জমি ওয়াকফ করেন। এই মাঠে ২৬৫টি কাতারে প্রায় এক লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।
সর্বশেষ খবর