
আজ পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদ উপলক্ষ্যে কিশোরগঞ্জে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ওয়াজিব নামাজ আদায়ের পর পশু কোরবানি করছেন। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় সামর্থ্য অনুযায়ী পশু উৎসর্গ করছেন তারা।
ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, প্রায় চার হাজার বছর আগে হজরত ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে সবচেয়ে প্রিয় বস্তু কোরবানি করতে চেয়েছিলেন। আল্লাহ তায়ালার প্রতি আনুগত্যের পরীক্ষায় তিনি পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি দিতে উদ্যত হলে আল্লাহ একটি দুম্বা পাঠিয়ে দেন এবং সেটি কোরবানি করার নির্দেশ দেন। সেই ঘটনার অনুসরণে মুসলিম সম্প্রদায় ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি করে থাকে।
শনিবার কিশোরগঞ্জের পাড়া-মহল্লায় দেখা গেছে, ঈদের নামাজ শেষে অনেকে নিজ নিজ পশু কোরবানি করছেন। শহরের অলিগলিতে পশু কোরবানির দৃশ্য চোখে পড়ার মতো। কেউ বাড়ির গ্যারেজে, কেউ সামনের রাস্তায়, আবার কেউ এলাকার ফাঁকা মাঠে পশু কোরবানি করছেন।
চুক্তিতে মাংস কাটতে আসা কসাইরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা চামড়া ছাড়িয়ে মাংস তৈরি করে দিচ্ছেন। একদিকে পশু জবাই, অন্যদিকে মাংস কাটা ও বিতরণের কাজ চলছে। সব মিলিয়ে চারপাশে উৎসবের আমেজ।
শহরের শিক্ষক পল্লীর বাসিন্দা ফাহিম আহমেদ হিমেল জানান, আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তারা পশু কোরবানি করেন। তিনি বলেন, "আল্লাহ তৌফিক দিয়েছেন, তাই প্রতিবার কোরবানি দেওয়ার চেষ্টা করি। পশু কোরবানির মাধ্যমে মনের পশুত্ব কোরবানি হোক, সেই প্রার্থনা করি।"
উকিলপাড়ার বাসিন্দা রবিউল আওয়াল আকাশ বলেন, "শুরুতে গ্রামে ঈদ করা হতো। এখন নানা কারণে শহরেই ঈদ করা হয়। তাই এখানেই পশু কোরবানি করছি। সকালে নামাজ পড়ে এসে পশু কোরবানি করা হয়েছে। এখন কসাইরা চামড়া ছাড়ানোর কাজ করছেন। মাংস কাটা শেষ হলে গরিবদের বিতরণ করা হবে এবং আত্মীয়দের বাসায় পাঠানো হবে।"
ইয়াসিন নামের একজন জানান, আল্লাহর রহমতে কোরবানি দিচ্ছেন এবং ধর্মীয় বিধান মেনে মাংস বিতরণ করবেন।
মো. ইব্রাহিম বলেন, "আল্লাহর অশেষ রহমতে ঈদের দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে পেরেছি। যেহেতু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি দিচ্ছি, তাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য মাংস খাওয়া নয়। যার যা পাওনা, ধর্মীয় বিধান মেনে তা বিতরণ করে দেওয়া হবে।"
ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী, কোরবানির পশুর মাংস আত্মীয়স্বজন ও গরিব-দুঃখীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। অনেক সামাজিক সংগঠনও দরিদ্র মানুষের ঘরে কোরবানির মাংস পৌঁছে দিচ্ছে।
কোরবানির জন্য পশু কেনা হলেও কেউ কেউ ঈদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে পশু কোরবানি করবেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই কসাইয়ের অভাবে প্রথম দিন কোরবানি করছেন না।
সর্বশেষ খবর