
বরগুনা জেলায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছে। জেলায় এ পর্যন্ত ১৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ চিকিৎসক সংকট, অপর্যাপ্ত ওষুধ এবং চিকিৎসা সামগ্রীর অভাবের কারণে পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে।
বরগুনা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত জেলায় ১ হাজার ৮৩৮ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১ হাজার ৬২৩ জন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন এবং বর্তমানে ২১৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আক্রান্তদের অধিকাংশই বরগুনা পৌর শহর ও সদর উপজেলার বাসিন্দা। তবে জেলার পাথরঘাটা, বামনা, বেতাগী ও আমতলীতেও ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালগুলোর অধিকাংশ ওয়ার্ডে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক রোগীকে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। নারী, শিশু ও মেডিসিন ওয়ার্ডগুলোতেও একই অবস্থা। অনেক রোগীকে বারান্দা ও করিডোরে রাখা হয়েছে, যা চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শয্যার পাশাপাশি রক্ত পরীক্ষার কিট ও স্যালাইনের সংকটও দেখা দিয়েছে। অনেক রোগীকে বাইরে থেকে পরীক্ষা করাতে এবং স্যালাইন কিনে আনতে হচ্ছে।
একজন রোগীর স্বজন হায়দার হোসেন জানান, তার ভাইকে তিন দিন ধরে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। হাসপাতালে জায়গা নেই এবং ডাক্তার-নার্সরা খুব ব্যস্ত। এছাড়াও হাসপাতালের ল্যাবে পরীক্ষা করা যাচ্ছে না, বাইরে থেকে করাতে হচ্ছে এবং স্যালাইনও বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রেজোয়ানুর আলম জানিয়েছেন, রোগীর চাপ সামাল দিতে তারা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা উপকরণ দ্রুত সরবরাহ করা না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।
বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মাদ আবুল ফাত্তাহ বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় চিকিৎসাসেবা দিতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে তারা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি জানান, বরগুনার ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য বরগুনা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ৮ জন চিকিৎসক ও ১০ জন নার্স পদায়ন করা হয়েছে। এছাড়া স্যালাইন ও রক্ত পরীক্ষার কিট সংকট নিরসনেও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর