
ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার নুরাবাদ ইউনিয়নে শাহে আলম তালুকদার নামের এক ব্যবসায়ীর দোকানঘর জবরদখল করে দফায় দফায় ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে নুরাবাদ ইউনিয়ন কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলমের বিরুদ্ধে। এছাড়াও, আরও এক লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে ওই ব্যবসায়ীর দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগও করেছেন ভুক্তভোগী।
ভুক্তভোগী শাহে আলম তালুকদার জানান, মঙ্গলবার সকালে নূরে আলম তাকে অবরুদ্ধ করে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তিনি শাহে আলমের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করেন। পরে স্থানীয়রা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে দুলারহাট থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে এবং স্বজনরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
ঘটনাটি ঘটে নুরাবাদ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চর তোফাজ্জল গ্রামে, নাইবের মসজিদের কাছে।
এই ঘটনায় শাহে আলম তালুকদার বাদী হয়ে নূরে আলম ও তার ভাই মো. কালুকে আসামি করে দুলারহাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
শাহে আলম তালুকদারের ভাষ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে নূরে আলম তার বাড়ির সামনের সড়কের ঢাল দখল করেন। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় স্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তির মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাকে সেখান থেকে উচ্ছেদ করা হয়। এরপর তিনি পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে যান। পরবর্তীতে দেশে ফিরে এসে তিনি জানতে পারেন নূরে আলম তার আরও একটি দোকানঘর দাবি করছেন এবং এর জন্য এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছেন। নিরুপায় হয়ে তিনি স্থানীয় বিএনপির এক নেতার শরণাপন্ন হন এবং তার মধ্যস্থতায় প্রথম দফায় ৬০ হাজার ও দ্বিতীয় দফায় ৮৫ হাজার টাকা দিয়ে দোকানঘরের দখল ফিরে পান। এরপর তিনি সেখানে আধাপাকা দোকানঘর নির্মাণ করে ভোগদখল করছিলেন।
শাহে আলম আরও অভিযোগ করেন, নূরে আলম তিন দফায় ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা নিয়েও পুনরায় ওই দোকানঘরটি নিজের দাবি করে তালা ঝুলিয়ে দেন এবং আরও এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ বিষয়ে দুলারহাট থানায় অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি বলে তিনি জানান।
অভিযোগের বিষয়ে নূরে আলম জানান, পূর্বে শাহে আলমের কাছ থেকে ঘরভিটে বিক্রির বাবদ ৬০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও তিনি তা পাননি। তাই তিনি ওই টাকা দাবি করছেন। তবে চাঁদাবাজি ও মারধরের অভিযোগ সঠিক নয় বলে তিনি দাবি করেন।
দুলারহাট থানা কৃষক দলের সভাপতি মো. মনির বেপারী জানান, সম্প্রতি একটি দোকানঘর নিয়ে বিরোধ শুরু হলে তিনি নূরে আলমের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা আদায় করে মীমাংসা করে দিয়েছিলেন। তিনি আরও জানান, নূরে আলমের আরও জমি রয়েছে যা আওয়ামী লীগের শাসনামলে স্থানীয় চেয়ারম্যান আলমগীর হাওলাদার জোর করে স্ট্যাম্পে লিখে নিয়েছিলেন। নূরে আলম মূলত সেই দোকানভিটের টাকাই দাবি করছেন।
দুলারহাট থানার ওসি আরিফ ইফতেখার জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং ভুক্তভোগী পরিবারের লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেছে। অভিযোগটি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর