
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে দর্শনার্থী দম্পতির ওপর হামলা, মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে কাস্টোডিয়ানসহ ১০ জন স্টাফের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) শাহজাদপুর আমলি আদালতে রূপপুর নতুনপাড়ার বাসিন্দা শাহনেওয়াজের স্ত্রী ছাবরিনা আক্তার সুইটি বাদী হয়ে মামলাটি করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে সিরাজগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আদালতের পেশকার আনোয়ার হোসেন।
মামলার আসামিরা হলেন, কাছারিবাড়ির কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান, গ্রন্থাগার পরিচালক শরীফুজ্জামান সরকার, বিদ্যুৎ ও বাগান পরিচালক সিরাজুল ইসলাম, মালি শফিকুল ইসলাম, কাউন্টার ও বাগান পরিচালক মজিবুর রহমান, নিরাপত্তা প্রহরী আব্দুল মমিন, নুহ শেখ, বাবলু সরকার, আনিসুর রহমান ও রেজাউল।
এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, গত ৮ জুন তিনি তার স্বামী ও ভাতিজাকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে ঘুরতে যান। প্রবেশের সময় টিকিটের মূল্য পরিশোধ করলেও কাউন্টার থেকে কোনো টোকেন দেওয়া হয়নি। পরে বের হওয়ার সময় টোকেন দেখতে চাইলে তিনি জানান, তাকে কোনো টোকেন দেওয়া হয়নি। এ সময় আসামিরা তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেন। বাদী বাধা দিলে কাছারিবাড়ির গেট বন্ধ করে কাস্টোডিয়ানের নির্দেশে শাহনেওয়াজকে লোহার রড ও পাইপ দিয়ে মারধর করা হয়। ছাবরিনা আক্তারের শ্লীলতাহানি করা হয় এবং তার গলার সোনার চেইন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এরপর শাহনেওয়াজকে একটি কক্ষে আটকে রেখে আবারও মারধর করা হয় এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলা হয়। পরে স্বজনরা এসে তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। শাহজাদপুর থানায় অভিযোগ করেও ফল না পেয়ে তিনি আদালতে মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, এর আগে দর্শনার্থীকে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে গত ১০ জুন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি কাছারিবাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় কিছু লোক কাছারিবাড়িতে হামলা চালিয়ে অডিটোরিয়াম ভাঙচুর করে এবং স্টাফদের মারধর করে। এরপর কর্তৃপক্ষ কাছারিবাড়িতে দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ ঘোষণা করে। দুই দিন পর কাছারিবাড়ি আবার খুলে দেওয়া হয়।
হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে ১১ জুন ১০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০ জনের বিরুদ্ধে শাহজাদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ইতোমধ্যে যৌথবাহিনী ও পুলিশের অভিযানে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনার তদন্তের জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর