বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় রাজনৈতিক সহিংসতা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের হওয়া একাধিক মামলায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের পাঁচ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার ও সোমবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন—গাড়ীদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের (পূর্ব শাখা) সহ-সভাপতি সহিদ শাজাহান (৫৪), একই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সহ-সভাপতি মো. মোজাহিদুল ইসলাম ওরফে মোজাহিদ (৪৬), শেরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. আরিফুর রহমান ওরফে শুভ (৩৫), কুসুম্বী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক মো. রেজাউল করিম (৩২) এবং ছাত্রলীগ নেতা মো. আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে মৃদুল (২৬)।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শেরপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ওই মিছিলে হামলা চালিয়ে স্থানীয় বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর করে এবং এতে প্রায় এক লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। ঘটনার প্রায় দশ মাস পর, ২০২৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর শেরপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিন্টু এ ঘটনায় শেরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তে পুলিশ গ্রেফতারকৃতদের সংশ্লিষ্টতা পায় এবং তাদের নিজ নিজ বাড়ি ও এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।

অন্যদিকে, ২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি প্রার্থী জি এম সিরাজের গাড়িবহরে বোমা বিস্ফোরণ ও হামলার ঘটনায় একটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয় ২০২৪ সালের ১৫ নভেম্বর। এই মামলায় তদন্তের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিমকে গ্রেফতার করা হয়।

এছাড়া, ২০২৩ সালের ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শেরপুরের ধুনটমোড়ে আন্দোলনকারী রিফাত সরকার হামলার শিকার হন। এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ২ নভেম্বর মামলা দায়ের করা হলে তদন্তে অভিযুক্ত হিসেবে ছাত্রলীগ নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে মৃদুলের নাম উঠে আসে। তাকেও রবিবার রাতে উলিপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মঈনুদ্দিন জানান, একাধিক মামলার তদন্তে গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং মামলাগুলোর তদন্ত প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে এই গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।