
'বিচার নয়, অপমান-এনসিপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে চলছে মব ট্রায়াল!' শিরোনামে একটি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেত্রী ও অভিনয়শিল্পী নীলা ইস্রাফিল।
তিনি বলেছেন, 'রাজনীতিতে একজন নারী হিসেবে পথ চলাটা সহজ নয়, জানতাম। শিল্পী হিসাবেও বুঝেছি অনেক আগেই । কিন্তু সত্য বলার পর, দলের ভেতরে যে ভয়াবহ মানসিক নিপীড়নের মুখে পড়তে হবে, সেটা কল্পনাও করিনি।'
তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, 'আমি নীলা ইসরাফিল, নিজে থেকে কিছু চাইনি। শুধু চেয়েছি একটি নিরাপদ, সম্মানজনক জায়গা, যেখানে আমি নীতির পক্ষে কথা বলবো। কিন্তু যখন আমি দলের ভেতরে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুললাম, তখন কেউ সামনে এসে প্রশ্ন করেনি, কেউ আমার পাশে ব্যক্তিগতভাবে দাঁড়াননি!'
তিনি যোগ করেন, 'বরং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম- ফেসবুক, WhatsApp এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ে গ্রুপে শুরু হয়ে গেল উশৃঙ্খল জনতার বিশৃঙ্খলা (মব ট্রায়াল) দলবদ্ধভাবে নিন্দা, অপপ্রচার, চরিত্রহননের চেষ্টা।'
নীলা ইস্রাফিল বলেন, 'আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই... এ কোনো আইনি প্রক্রিয়া নয়। এটা এক ধরনের ডিজিটাল লিঞ্চিং। যেখানে কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে "মত তৈরি" করছেন, গুজব ছড়াচ্ছেন, এবং আমার সম্মান এবং আত্মমর্যাদাকে টুকরো টুকরো করে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।'
তিনি বলেন, 'এটাই কি আপনাদের দলীয় চেতনা এবং নৈতিকতা, যার কথা বলে আমরা জনগণের সামনে দাঁড়াই? যখন একজন নারী সদস্য যৌন হয়রানির শিকার হন, তখন দলের কর্মীবৃন্দ চুপ থাকেন। কিন্তু যখন সেই নারী প্রতিবাদ করে, তখন তাকে ঘিরে গ্রুপে চলতে থাকে আলোচনা, ঠাট্টা, খোঁচা, সন্দেহ, সব কিছুর নাম "গণতন্ত্রের চর্চা"। না, এ গণতন্ত্র নয়, এটি হাসিনার রেখে যাওয়া ফ্যাসিবাদ। এটা ভয়ঙ্কর মব-সংস্কৃতি, যা সত্যকে ধামাচাপা দিতে চায়, ভুক্তভোগীকে দোষী বানাতে চায়।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি এ চক্রান্তে ভয় পাই না। কারণ আমি জানি, আমি কোনো অপরাধ করিনি। আমি কেবল সাহস করেছি, বলেছি, "না, আমি তা মেনে নেবো না।"
আমার কণ্ঠরোধ করতে আপনারা যত গ্রুপ খুলুন, আমি বলবো- মুখ বন্ধ করলে সত্য মরে যায় না। আমি চাই স্বচ্ছ তদন্ত, চাই দলীয় অবস্থান, চাই সম্মানজনক বিচার। আমি মব-গ্রুপে নয়, প্রকৃত ন্যায়ের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতে প্রস্তুত।'
নীলা আরো যোগ করেন, 'আপনারা মনে করতে পারেন, আমার লিখা এবং তুষারের সাথে রেকর্ডিং ছড়িয়ে মব করতে চেয়েছি, ভুল আপনারা, আমার লিখা এবং তুষারের সাথে রেকর্ডিং তুষারের অপরাধের প্রমাণ। ঘুমহীন এই রাতগুলোর নিরব সাক্ষী আছে -একদিন সব সামনে আসবেই।'
তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে সব শেষে বলেন, 'আমার ফোন যেকোনো মুহূর্তে জব্দ করতে পারে, আমিও হঠাৎ নাই হয়ে যেতে পারি। তাই বিষয়গুলো সামনে আনতে বাধ্য হলাম।'
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর