
দালালের মাধ্যমে রাশিয়া গিয়ে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে রুশ বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে সোহান মিয়া নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সোহান নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বাসিন্দা।
গত ২১ জুন বিকেলে সোহানের বন্ধু ও সহযোদ্ধা জাফরের মাধ্যমে তার পরিবার এই খবর জানতে পারে। জাফর ফোনে সোহানের মৃত্যুর খবর জানায় এবং মরদেহের ছবি পাঠায়। সোহান মিয়া গজারিয়া ইউনিয়নের ইছাখালী গ্রামের মৃত সোহরাব মিয়ার ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ইউরোপে ভালো চাকরির আশায় সোহান ও তার বোনের জামাই আকরাম মিয়া ১৪ লাখ টাকা ধার করে দালালের মাধ্যমে দেশ ছাড়েন। ঢাকার বনানীর ড্রিম হোম ট্রাভেলসের জেরিন নামের এক দালালের মাধ্যমে তারা সাইপ্রাস যাওয়ার জন্য কাগজপত্র জমা দেন। তবে দালালচক্র তাদের রাশিয়ার ভিসা করে দেয়। ২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর ১০ জনের একটি দল রাশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করে।
সেন্ট পিটার্সবার্গ বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তাদের চার দিন সেখানে রাখা হয়। পরে সোহানসহ দুজনকে সেখান থেকে রাশিয়ার সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। ক্যাম্পে তাদের অস্ত্রের প্রশিক্ষণ দিতে বাধ্য করা হয় এবং প্রশিক্ষণে রাজি না হলে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
সোহানের বোনজামাই আকরাম মিয়া কৌশলে পালিয়ে এসে জানান, সেখানে প্রশিক্ষণ নিতে অস্বীকার করলে মারধর ও খাবার না দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটানো হতো। আকরাম পালিয়ে এসে দেড় লাখ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে গত ১৬ জানুয়ারি দেশে ফেরেন।
সোহানের মা নূর ন্নাহার ছেলের মরদেহ ফেরত চেয়ে সরকারের কাছে আকুতি জানিয়েছেন এবং দালালদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেছেন।
সোহানের স্ত্রী হাবিবা আক্তার জানান, তার স্বামীকে ফিরিয়ে আনার জন্য ড্রিম হোম ট্রাভেলসের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়েছিল। তারা আড়াই লাখ টাকা নিয়ে ২৬ জানুয়ারির মধ্যে সোহানকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তবে এখন তিনি লাশ হয়ে ফিরে আসছেন। হাবিবা আক্তারও দালালদের বিচার চান এবং সরকারের কাছে তার স্বামীর মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
পলাশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবুবক্কর সিদ্দিকী জানান, পরিবার আবেদন করলে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সোহানের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে এবং তার পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর