নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি, নেত্রকোনা জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, নেত্রকোনা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি প্রশান্ত কুমার রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিবার গভীর রাতে গাজীপুরের টঙ্গীর দত্তপাড়া এলাকার একটি বাসা থেকে নেত্রকোনা থানা পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

প্রশান্ত কুমার রায় নেত্রকোনা শহরের বড় বাজারের বাসিন্দা। তিনি বিভিন্ন সময় নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন পদে ছিলেন। এর মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি, সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রায় ছয় বছর আগে তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারতেন না।

দলীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বছর সরকার পরিবর্তনের পর থেকে এ পর্যন্ত নেত্রকোনার ১০টি থানায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তত ৬০টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা ছয় হাজারের বেশি।

নেত্রকোনা সদর ও বারহাট্টা থানায় দায়েরকৃত মামলার মধ্যে প্রশান্ত কুমার রায়কে আটটি মামলায় আসামি করা হয়েছে। আত্মগোপনে থাকার পর গত ২০ জুন সকালে তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ব্যানারে নেত্রকোনা জেলা শহরের প্রধান সড়কে একটি ঝটিকা মিছিল বের হয়। ওই দিন জেলা শহরের বড় বাজার থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ছোট বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয় এবং সেখানে প্রশান্ত কুমার রায় বক্তব্য রাখেন। এই কর্মসূচির ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে একই দিন সন্ধ্যায় ও রাতে নেত্রকোনা জেলা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও খেলাফত আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করে প্রশান্ত কুমার রায়ের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। এ সময় তাঁর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রশান্ত কুমার রায়কে গ্রেপ্তারের জন্য তৎপর হয়। রোববার রাত সোয়া ১১টার দিকে গাজীপুরের টঙ্গীর দত্তপাড়া এলাকার একটি বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

নেত্রকোনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহ্ নেওয়াজ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রশান্ত কুমার রায়কে টঙ্গীর দত্তপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে।