
নিরাপদ খাদ্য মানুষের মৌলিক অধিকার, তাই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উৎপাদক, সরকার, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ—সবার একযোগে কাজ করা উচিত। এক্ষেত্রে ভোক্তাদের সচেতনতা ও সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে জোরালো ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোছা. মিনারা খাতুন গতকাল বৃহস্পতিবার এক আলোচনায় এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন শুধু কৃষক, উৎপাদক বা সরকারের কাজ নয়। ভোক্তা হিসেবে আমাদেরও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সচেতন হয়ে ভালো পণ্য বাছাই এবং সঠিক অভ্যাস গড়ে তুললে পুরো খাদ্য ব্যবস্থাই নিরাপদ হতে পারে।
অধ্যাপক ড. মোছা. মিনারা খাতুন নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে ভোক্তাদের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ভোক্তাদের সচেতনতা ও শিক্ষা এক্ষেত্রে ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ। কোন কোন খাদ্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, সে বিষয়ে জানতে হবে। খাদ্য কেনার সময় পণ্যের গায়ে থাকা লেবেল দেখে জৈব, ভেজালমুক্ত ও মেয়াদের তারিখ দেখে নিরাপদ পণ্য নির্বাচন করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত বা খোলা প্যাকেট এড়িয়ে যাওয়া উচিত। স্থানীয় কৃষক বা উৎপাদকের কাছ থেকে খাবার কিনলে উৎপাদন পদ্ধতি সম্পর্কে সহজে জানা যায়। তাই স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত খাদ্যকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, খাবার সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও প্রস্তুত করতে জানতে হবে। ফ্রিজে রাখা, রান্নার আগে ও পরে হাত ধোয়া, কাঁচা ও রান্না করা খাবার আলাদা রাখা—এসব নিয়ম মেনে চললে অনেক রোগ প্রতিরোধ করা যায়। যতটুকু খাদ্য দরকার, ততটুকু কেনা উচিত, যাতে খাদ্য নষ্ট না হয়। পচা বা নষ্ট খাবার পরিবেশ দূষণ করতে পারে। তাই বর্জ্য ঠিকভাবে ফেলতে হবে এবং প্রয়োজনে পুনর্ব্যবহার করতে হবে।
অধ্যাপক মিনারা খাতুন বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা কেবল উৎপাদনকারীদের একক দায়িত্ব নয়, এটি আমাদের সবার দায়িত্ব। ভোক্তারা সচেতনভাবে খাদ্য নির্বাচন করলে, উৎপাদকরাও মানসম্মত ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে উৎসাহিত হবেন।
তিনি আরও বলেন, কোনো খাদ্যে দুর্গন্ধ, অস্বাভাবিক রং কিংবা স্বাদ থাকলে তা অবহেলা না করে স্থানীয় প্রশাসন বা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে জানানো উচিত। সচেতন ভোক্তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সচেতনতামূলক বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারেন অথবা স্থানীয় সভা-সেমিনারে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে অন্যদের উদ্বুদ্ধ করতে পারেন। এছাড়া, সরকারের খাদ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত আইন ও উদ্যোগকে সমর্থন করতে হবে এবং অন্যদেরকেও সচেতন করতে হবে।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর