
চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, ইতিহাস ও ইসলামের প্রবেশদ্বার হিসেবে উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রধান নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “চট্টগ্রাম বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের অংশ। চট্টগ্রামের দিকে কেউ চোখ তুলে তাকালে সমগ্র বাংলাদেশ একসঙ্গে বিদ্রোহ ঘোষণা করবে।”
রোববার (২০ জুলাই) রাতে নগরীর ষোলশহরে এপসিপির আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “চট্টগ্রাম যুগে যুগে ইতিহাসে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। স্বাধীনতা আন্দোলন হোক কিংবা ধর্মীয়-সামাজিক আন্দোলন—প্রতিবারই চট্টগ্রাম ছিল নেতৃত্বে। নানা পরাশক্তি চট্টগ্রাম নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে, তাদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি—চট্টগ্রাম শুধু একটি শহর নয়, এটি দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক।”
তিনি আরও বলেন, “চট্টগ্রাম দ্বিতীয় দুর্গ হিসেবে নিজেদের ঘোষণা দিয়েছিল। এই চট্টগ্রাম ফ্যাসিস্টদের তাড়িয়েছে, ভবিষ্যতেও দেবে প্রতিরোধ। বাঁশখালীতে আমাদের সহযোদ্ধার ওপর হামলা হয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বাধা দিয়ে এনসিপিকে থামানো যাবে না।”
চট্টগ্রামের নগর ব্যবস্থাপনা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেন, “এ নগরীর পানি ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো, সেবা—সবকিছুই বেহাল। নানা লুটেরার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা চট্টগ্রামকে নতুন করে গড়ে তুলতে চাই, নতুন বাংলাদেশে একটি নতুন চট্টগ্রাম দেখতে চাই।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক শক্তি অর্জনের জন্য চট্টগ্রামকে একটি শক্তিশালী সমুদ্র ও নৌ শক্তির ঘাঁটি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এনসিপি সে কাজ করবে।”
আঞ্চলিক ভাষায় বক্তব্য দিয়ে তিনি বলেন, “বহুতদিন খাইয়্যু, আঁর ন খাইয়্যু” (অনেক দিন খেয়েছো, আর খেয়ো না)। তিনি জানান, “চট্টগ্রাম হবে জনগণের চট্টগ্রাম, নাগরিকের চট্টগ্রাম। এখানে সব জনগোষ্ঠীর মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করা হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে বৈষম্য, দুর্নীতি, স্বৈরতন্ত্র কিংবা ধান্ধাবাজি থাকবে না।”
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, “আমরা স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছি, কিন্তু রাষ্ট্র গঠনে সফল হইনি। এখন সময় এসেছে ভেঙে পড়া অর্থনীতি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে পুনর্গঠনের।”
তিনি আরও বলেন, “তরুণ প্রজন্মকে কেনা যায় না। তারা ইতিহাস রচনার জন্য প্রস্তুত। বাংলাদেশ কারও বাপের না—কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি।”
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিপা, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন এবং সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা প্রমুখ।
সর্বশেষ খবর