
কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলায় চার বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত হাসানকে (১৮) দুই সপ্তাহেও গ্রেফতার করতে না পারায় বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী। ‘ভূমিহীন সংগঠন’-এর নেতৃত্বে সোমবার (২১ জুলাই) বুড়িরপাড় বাজারে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
সকাল ১১টায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বুড়িরপাড় গ্রামের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বুড়িরপাড় বাজারে এসে মানববন্ধনে মিলিত হয়। এসময় ধর্ষক হাসানকে দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
ভূমিহীন সংগঠন নেত্রী সেফালী বেগমের সভাপতিত্বে এবং প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও কবি হান্নান মুন্সীর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কুমিল্লা জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি এবিএম আতিকুর রহমান বাশার, ‘নিজেরা করি সংস্থা’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় সংগঠক গোলশান আরা, ভূমিহীন নেতা আব্দুল আজিজ, ‘নিজেরা করি সংস্থা’র অঞ্চল সমন্বয়ক আব্দুল জব্বার, ভুক্তভোগী শিশুর নানা রেনু মিয়া, মামা জমির হোসেন, রসুলপুর ভূমিহীন সংগঠন আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি আবু মিয়া, ভূমিহীন সংগঠন নেতা আবুল বাশার, লিল মিয়া প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, দেশে শিশু ও নারী ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় অপরাধীরা বার বার অপরাধ করার সুযোগ পাচ্ছে। তারা অভিযোগ করেন, দেবিদ্বারে চার বছরের শিশু ধর্ষণচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি হাসানকে ১৪ দিনেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। উপরন্তু ধর্ষকের পরিবার মামলা তুলে নিতে ভুক্তভোগীর পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। বক্তারা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষক হাসানসহ হুমকিদাতা ধর্ষকের বাবা সাইফুল ইসলাম বাবুল ও মা হালিমা আক্তারকে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। অন্যথায় উপজেলা সদরে বিক্ষোভ ও থানা ঘেরাওয়ের হুমকি দেন আন্দোলনকারীরা।
উল্লেখ্য, গত ৬ জুলাই ভুক্তভোগী শিশুটি তার মায়ের সাথে উপজেলার রাঘবপুর গ্রামে মামার বাড়িতে বেড়াতে আসে। ওই দিন বেলা ২টায় পাশের ঘরের চাচাতো মামা মো. হাসান (১৮) তাকে চিপস খাওয়ানোর কথা বলে নিজ ঘরে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এসময় শিশুটির চিৎকারে বাড়ির লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে এবং হাসানকে আটক করে বেঁধে রাখে। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বিষয়টি গোপন রেখে রাতে সালিসে বসেন। সালিসে সমঝোতা না হওয়ায় হাসানকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে ৭ জুলাই হাসান (১৮), হাসানের বাবা সাইফুল (বাবুল) (৪৫) ও মা হালিমা বেগমকে (৩৮) অভিযুক্ত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(৪) ‘খ’ ধারায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ধর্ষক হাসানের বাবা সাইফল (বাবুল) (৪৫) ও মা হালিমা বেগমকে (৩৮)-কে আটক করে কোর্ট হাজতে পাঠায়। পরবর্তীতে তারা জামিনে এসে ভুক্তভোগীর পরিবারকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাজহারুল ইসলাম জানান, অভিযুক্ত হাসানকে কেন গ্রেফতার করা যাচ্ছে না, তা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলতে পারবেন। ধর্ষকের বাবা-মা জেল থেকে জামিন পাওয়ার বিষয়টি আদালতের।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর