নবীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও নবীগঞ্জ পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ছাবির আহমদ চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে নবীগঞ্জের মাছ ও শুঁটকির আড়তে সংঘবদ্ধ হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও চুরির ঘটনায় ১১৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৫০০-৭০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলায় বলা হয়েছে, সাবেক মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরীর নেতৃত্বে মাছ ও শুঁটকির আড়তে ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং নগদ টাকা ও মাছ-শুঁটকি চুরির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার নবীগঞ্জ থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয় (মামলা নং ১৮/১৬৫, তাং ২২/০৭/২০২৫)।
মামলার বাদী হলেন নবীগঞ্জ মাছ ও শুঁটকির আড়তদার মোঃ জুয়েল মিয়া। সাত দিনের ব্যবধানে নবীগঞ্জের সাবেক মেয়রের বিরুদ্ধে এটি দ্বিতীয় লুটপাটের মামলা। এই মামলায় নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছনি আহমদ চৌধুরীকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বাদী বলেন, "আমি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, সমাজকর্মী এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নাগরিক। আসামিরা চরম সাম্প্রদায়িক, পরস্পর দলবদ্ধ, সন্ত্রাসী ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী লুটেরা ব্যক্তি বটে। প্রধান আসামি ছাবির আহমদ চৌধুরী গং আসামিরা ভদ্রতার মুখোশে, নেতৃত্বে থেকে, মানুষে মানুষে জাতিগত ও গোষ্ঠীগত দাঙ্গা ছড়িয়ে দিয়ে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে, বিভিন্ন সময়ে নবীগঞ্জে পরিকল্পিত জাতিগত দাঙ্গা সৃষ্টি করে পর্দার আড়ালে মুখ্য ভূমিকা পালনকারী ব্যক্তি বটে।"
বাদীর অভিযোগ অনুযায়ী, ইনাতগঞ্জ ও তিমিরপুরের দুজন সাংবাদিকের পূর্ব বিরোধের জের ধরে ট্রাফিক পয়েন্টে মারামারির ঘটনায় আনমুনুগ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি তিমিরপুরের দুজনকে ধরে পুলিশে দেন। স্থানীয় মুরুব্বিরা সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির শর্তে থানা থেকে ঐ দুজনকে ছাড়িয়ে আনেন। এরপর সাবেক মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরীর নেতৃত্বে তিমিরপুর গ্রামের প্রাইমারি স্কুল মাঠে মিটিং করে পরিকল্পিতভাবে শত শত লোকজনকে নিয়ে নবীগঞ্জ মাছ বাজার ও শুঁটকি বাজারে গিয়ে চিৎকার ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে একটি ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করলে রাজনগর গ্রামের কতেক ব্যক্তিসহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ তাদের তাণ্ডবের প্রতিবাদ করেন। এরপর সাবেক মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরীর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা মারমুখী হয়ে ইট, পাথরসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নবীগঞ্জ মাছ বাজার ও শুঁটকি আড়তে হামলা, লুটপাট চালায় ও অগ্নিসংযোগ করে। মাছ বাজার ও শুঁটকির আড়তের জিনিসপত্র ভেঙে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয় এবং এই সময় শুঁটকির মটকাগুলো ভেঙে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার শুঁটকি ও মাছ লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়। সাবেক মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরীর নেতৃত্বে কয়েক শতাধিক সশস্ত্র লোকজন ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেন।
নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ কামরুজ্জামান নবীগঞ্জ থানায় মামলা রেকর্ডের সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, এসব দাঙ্গাবাজকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর