
দুর্ঘটনা যেন পিছু ছাড়ছে না ভারতের বিমান পরিবহন সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার। এবার হংকং থেকে নয়াদিল্লিগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে অবতরণের পরপরই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এটি গত ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে তৃতীয় দুর্ঘটনা।
মঙ্গলবার এয়ার ইন্ডিয়ার এআই-৩১৫ ফ্লাইটটি দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর বিমানটির অক্সিলিয়ারি পাওয়ার ইউনিটে (এপিইউ) আগুন ধরে যায়।
এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, যাত্রীরা বিমান থেকে নামার সময়ই আগুন ধরে যায়। তবে বিমানের সব আরোহী ও কেবিন ক্রু নিরাপদে বেরিয়ে আসেন। এই ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিমানের ফায়ার সিস্টেমে আগুন শনাক্ত হওয়ার পরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায় এপিইউ।
এয়ার ইন্ডিয়া বলেছে, অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনায় দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট এয়ারবাস এ৩২১ বিমানের ‘কিছু ক্ষতি’ হয়েছে। এই ঘটনা তদন্তে ইতোমধ্যে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ বিষয়ে দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালককে জানানো হয়েছে।
এদিকে গত ৪৮ ঘন্টায় এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে তিনটি দুর্ঘটনা ঘটে।
এরআগে গতকাল সোমবার সকালে ভারতের মুম্বাই বিমানবন্দরে প্রবল বৃষ্টির মধ্যে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে গেছে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইট। এ ঘটনায় বিমানের চাকা এবং ইঞ্জিন বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন বিমানটির ক্রু ও যাত্রীরা।
এদিন মুম্বাইয়ের ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কেরালার কোচি থেকে আসা এয়ার ইন্ডিয়ার এআই ২৭৪৪ এ৩২০ বিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
মুম্বাই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘সকাল ৯টা ২৭ মিনিটে কোচি থেকে আসা একটি ফ্লাইট ভারী বৃষ্টিতে ভেজা রানওয়েতে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গেই জরুরি ব্যবস্থাপনা দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। বিমানে থাকা যাত্রী ও ক্রু সকলেই নিরাপদে আছেন।’ তবে বিমানটিতে কতজন যাত্রী ও ত্রু ছিলেন তা এখনো জানানো হয়নি।
একই দিন দিল্লি থেকে কলকাতাগামী একটি ফ্লাইট উড্ডয়নের সময় ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটার গতিতে ছুটছিল। পরে শেষ মুহূর্তে ওই ফ্লাইটের উড্ডয়ন বাতিল করা হয়। প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে এয়ার ইন্ডিয়ার এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ জুন ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদ থেকে ২৪২ জন যাত্রীসহ লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রার কিছু সময় পরই একটি মেডিকেল ছাত্রবাসের ওপর বিধ্বস্ত হয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান। বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার মডেলের বিমানটি বৃহস্পতিবার দুপুরে উড্ডয়নের পর মাত্র ১০০ মিটার (প্রায় ৩৩০ ফুট) ওপরে উঠেই দুর্ঘটনার শিকার হয়। এ দুঘর্টনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৭৯ জন, যা ভারতের বিমান চলাচলের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা হিসেবে ধরা হচ্ছে।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর