• ঢাকা
  • ঢাকা, সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৭ ঘন্টা পূর্বে
মো. আমজাদ হোসেন রতন
নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৩ জুলাই, ২০২৫, ০৩:৫৫ দুপুর

পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি: অবহেলায় হারাচ্ছে ঐতিহাসিক গৌরব

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুরে ধলেশ্বরী নদী তীরে অবস্থিত পাকুটিয়া জমিদার বাড়িটি নান্দনিক শিল্প, ঐতিহ্য ও ইতিহাসের এক অনন্য নিদর্শন। তবে বর্তমানে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় এবং সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এটি তার গৌরবময় অতীত হারাচ্ছে।

প্রায় ১৫ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই জমিদার বাড়িটি টাঙ্গাইল সদর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থেকে ১২ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। এখানে আজও দাঁড়িয়ে আছে সুন্দর কারুকার্যখচিত অট্টালিকা, পুরোনো নাটমন্দির, দীঘি ও কূপ, যা এক সময়ের জমিদারি জীবনের নীরব সাক্ষ্য বহন করে চলেছে।

ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে তৎকালীন ব্রিটিশ রাজধানী কলকাতার সঙ্গে মেইল স্টিমার ও যাত্রীবাহী নৌযোগে নাগরপুরের বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সূত্র ধরেই কলকাতা থেকে আগত ধনাঢ্য ব্যবসায়ী রামকৃষ্ণ সাহা এখানে জমিদারি শুরু করেন। ১৯১৫ সালে নির্মিত হয় পরপর তিনটি বিশাল অট্টালিকা একই নকশায়, পাশ্চাত্য শিল্পের প্রভাবে। জমিদার বাড়িটি পরিচিত ছিল 'তিন তরফ' বা 'তিন মহলা' নামে। প্রতিটি অট্টালিকার সামনের বারান্দায় দুটি পূর্ণাঙ্গ সুন্দরী নারী মূর্তি, রেলিংয়ের কার্নিশে সারি সারি ক্ষুদ্র নারী মূর্তি এবং লতাপাতা, ফুলের অলংকরণে মণ্ডিত নকশা— সবই চমৎকার শৈল্পিক ছোঁয়া বহন করে। এই জমিদাররা তাদের প্রজাদের জুতা পায়ে বা মাথায় ছাতা নিয়ে বাড়ির সামনে দিয়ে চলাচলে নিষেধ করতেন, যা সে সময়কার আভিজাত্যের পরিমাণ বোঝায়।

জমিদার বাড়ির প্রবেশ মুখেই রয়েছে একটি পুরোনো মন্দির, যা এককালে দুর্গাপূজার প্রতিমা নির্মাণে বিখ্যাত ছিল। ভারতবর্ষের খ্যাতনামা কারিগররা শরৎকালে এখানে প্রতিমা তৈরি করতেন। এখন সেখানে ইট খসে পড়ছে, নকশাগুলো ঝুঁকিতে। পাশাপাশি রয়েছে তিনটি নাট মন্দির ও মাঠের মাঝে একটি দ্বিতল বিশিষ্ট নাচঘর।

১৯৬৭ সনে জমিদার বাড়ির মূল ভবনের একটি অংশ অধিগ্রহণ করে প্রতিষ্ঠিত হয় "পাকুটিয়া বিসিআরজি ডিগ্রি কলেজ", যা এখনো চালু আছে। অন্য ভবনগুলোয় বর্তমানে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, একটি দাতব্য সংস্থা ও তহশিল অফিস কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তবে ভবনের অনেক জায়গায় ফাটল, খসে পড়া ছাদ, নষ্ট হয়ে যাওয়া শিল্পকর্ম প্রমাণ করে এটি আজও যথাযথ সংরক্ষণের বাইরে।

নাগরপুর উপজেলার এই ঐতিহাসিক নিদর্শন প্রতিদিন অনেক পর্যটককে আকৃষ্ট করলেও, সরকারি উদ্যোগের অভাবে ভবনগুলোর রূপ-লাবণ্য হারিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়দের মাঝে এখন এই দাবিই জোরালো হচ্ছে যে, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এমন একটি মহামূল্যবান সম্পদ যেন কালের গর্ভে বিলীন না হয়। পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি শুধু প্রাচীন স্থাপত্য নয়, এটি একসময়ের সংস্কৃতি, শাসন ও সমাজ বিন্যাসের নিঃশব্দ সাক্ষ্য। যথাযথ সংরক্ষণেই ফিরতে পারে এর হারানো ঐতিহ্য।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]