
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে সেনাবাহিনীর এক মানবিক উদ্যোগে দুটি পরিবারের মুখে হাসি ফুটেছে। কুশিয়ারা নদীর ভাঙনে বাস্তুভিটাহীন এই দুটি পরিবার পেয়েছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। অসহায় পরিবার দুটি নতুন ঘর পেয়ে অত্যন্ত খুশি। সেনাবাহিনীর এই মানবিক সেবা এলাকায় প্রশংসিত হয়েছে।
সোমবার দুপুরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নির্মিত ঘর দুটি বাস্তুভিটাহীন দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। এ সময় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সেনাকর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। দুটি পরিবারকে ঘরের চাবি ও ঘরের বাকি সংস্কারের জন্য নগদ কিছু টাকা প্রদান করেন নবীগঞ্জ ও বানিয়াচং সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ মেজর আশরাফুল ইসলাম তামিম।
যে দুটি পরিবারকে ঘর প্রদান করা হয়, তারা হলেন দীঘলবাক ইউনিয়নের গালিমপুর গ্রামের অর্জুন বিশ্বাস (৪৮) ও আব্দুর রহিম (৪২)। অর্জুন বিশ্বাসের পরিবারে ৩ মেয়ে ১ ছেলেসহ মোট ৬ জন সদস্য এবং আব্দুর রহিমের পরিবারে ১ মেয়েসহ মোট ৫ জন সদস্য। এই দুটি পরিবারকে গতকাল সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নতুন নির্মিত ঘর দুটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় স্থানীয় মেম্বার আকুল মিয়া সহ গ্রামের বিশিষ্ট গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কুশিয়ারার ডাইকের পাশে গালিমপুর গ্রামের নদী ভাঙনে কয়েকটি অসহায় ও দরিদ্র পরিবার ভিটেমাটিহীন হয়ে পড়ে। সেনাবাহিনীর বিশেষ টহল দল কুশিয়ারা ডাইক পরিদর্শনে গেলে এই দুটি পরিবারের দুর্দশা তাদের চোখে পড়ে। এর ফলস্বরূপ, সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের জন্য নতুন বাড়ি ও ঘর তৈরি করে দেন।
এ ব্যাপারে অর্জুন বিশ্বাস বলেন, "আমি ছেলেমেয়ে নিয়ে একদম অসহায় হয়ে পড়েছিলাম, কী করব, কোথায় বাচ্চা-কাচ্ছাদের নিয়ে থাকব, চিন্তায় ছিলুম। সেনাবাহিনীর ঘরবাড়ি পেয়ে অনেক খুশি হয়েছি, আল্লাহ আমারে আলাদিনের চেরাগ দিছেন।" আব্দুর রহিম বলেন, "কী বলব, আমি আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছি। যখন কিছু চিন্তা করে পাচ্ছিলাম না, তখন মাথা গোঁজার ঠাঁই দিয়েছেন আমার (সেনাবাহিনী) বাবারা। কত ঝড়-তুফানের বাড়ি খেয়ে এখন পাকা ঘর পেয়েছি। আমি এক মেয়ে ও তিন ছেলে নিয়ে আরামে থাকব।"
স্থানীয় মেম্বার আকুল মিয়া বলেন, "আমার ওয়ার্ডের মানুষ খুব খুশি সেনাবাহিনীর মানবিক আচরণে। এই ঘরবাড়ি না পেলে দুটি পরিবার এলাকা ছেড়ে চলে যেত। এখন তারা পাকা বাড়ি পেয়েছেন, খুশির সীমা নাই।" বানিয়াচং সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ মেজর আশরাফুল ইসলাম তামিম বলেন, "মানবিক কাজ সেনাবাহিনী সব সময় করে আসছে।"
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর