
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কচুয়া-আড়াইপাড়া সড়কটি বছরের পর বছর টেকসই সংস্কার না হওয়ায় এটি এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন হাজারো মানুষ, যানবাহন ও শিক্ষার্থীরা এই আট কিলোমিটার সড়কের প্রায় পুরোটা জুড়েই খানাখন্দকের কারণে ভয়াবহ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
জানা গেছে, এ সড়কের দু’পাশেই রয়েছে বেশ কয়েকটি গ্রাম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজার ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে সখীপুর পৌর শহর, টাঙ্গাইল সদর, বাসাইল, মির্জাপুর, ঘাটাইল, ফুলবাড়িয়া, কালিহাতি, ভালুকা, গফরগাঁও এবং ময়মনসিংহ সদর যেতে হয়। এটি কয়েকটি জেলা ও উপজেলার সংযোগ সড়ক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। এ সড়ক দিয়েই দেশের অন্যতম বৃহৎ কলার হাট কুতুবপুরে যেতে হয়।
পথচারী ও স্থানীয়রা জানান, কচুয়া-সখীপুর এবং কচুয়া-আড়াইপাড়া সড়কে প্রতি বছর বর্ষা এলেই জনসাধারণ এমন দুর্ভোগে পড়ে। এবার বর্ষায় এ সড়কের পিচ উঠে মাটি দেখা যাচ্ছে, ফলে বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনা ঘটছে।
সড়কটির টেকসই সংস্কার না হওয়ায় একদিকে পথচারী, শিক্ষার্থী এবং হাসপাতালে জরুরি সেবাপ্রত্যাশীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অন্যদিকে কলা ব্যবসায়ী, পোল্ট্রি খামারি, ডিম ব্যবসায়ী, মৎস্য ব্যবসায়ীসহ এ অঞ্চলের সবজি ও কাঁচামাল আমদানি ও রপ্তানিকারকরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। সড়কের এমন বেহাল দশায় আমদানি করা পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে এবং রপ্তানি করা পণ্য যথাসময়ে পৌঁছাতে না পারায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আজহারুল ইসলাম বলেন, "এই রাস্তায় বর্ষায় বৃষ্টির পানি জমে থাকায় চলাচলে ভয়াবহ সমস্যা হয়। শিক্ষার্থী ও পথচারীদের ভীষণ দুর্ভোগ পোহাতে হয়।"
ডাকাতিয়া মাজেদা মজিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, "প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার সময় জামাকাপড় ভিজে যায়, কখনো কখনো পড়ে যাই। অনেক সময় ভ্যান নিয়েও যেতে পারি না।"
অটোরিকশা চালক মো: হারুন বলেন, "আড়াইপাড়া থেকে কচুয়া যেতেই গাড়ির অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। সড়ক ভাঙাচোরা থাকায় গাড়ি অল্প কদিন চালালেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আয় যা করছি গাড়ি মেরামত করতেই তা শেষ হয়ে যাচ্ছে।"
ডাকাতিয়া মাজেদা মজিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ইয়াসিন আলী বলেন, "এই সড়ক দিয়ে হাজারো মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করছে। উন্নয়নের যুগে এসে এখনও আমরা রাস্তাই চাই, এটা দুঃখজনক।"
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ (সওজ) টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী সিনথিয়া আজমিরী খান জানান, "ভারী ও অতি বৃষ্টিপাতের কারণে সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকদিন আগে সড়কের মিলপাড়া স্থানে জরুরি ভিত্তিতে বিভাগীয় মেরামতের মাধ্যমে সড়কটি যানবাহন চলাচল উপযোগী করা হয়।" তিনি আরও বলেন, সড়কটির স্থায়ী সংস্কার কাজ সম্পাদনের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চলতি অর্থবছরে পিরিয়ডিক মেইনটেইনেন্স প্রোগ্রাম সড়ক মেজর-এর আওতায় আড়াইপাড়া হতে সখীপুর পর্যন্ত প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, প্রস্তাব অনুমোদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে দরপত্র প্রক্রিয়া শেষে আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে সড়কটির স্থায়ী সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর