জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে পাইকগাছা উপজেলায় ফলজগাছ বিতরণ করা হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর ও উপজেলা কার্যালয়ের সহযোগিতায় মঙ্গলবার সকালে পৌরসভার সরল ৪নং ওয়ার্ডস্থ শহীদ গফুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ফলজগাছের চারা বিতরণ ও রোপণ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন। এ সময় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যুৎ রঞ্জন সাহা, উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা মৃদুল কান্তি দাশ, প্রধান শিক্ষক সেলিনা পারভীন, সহকারী শিক্ষক সুব্রত দাশসহ কোমলমতি শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন বলেন, "জুলাইয়ের ক্ষত ভুলবার নয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে ও স্থানীয়ভাবে বৃক্ষরোপণ করুন। প্রকৃতি ও পরিবেশকে সবুজে ভরে তুলি। একটি সুন্দর আবাসভূমি তৈরি করি।"
*পাইকগাছার চাঁদখালী বাজারের সরকারি জায়গায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ কাজ বন্ধের দাবি*
পাইকগাছার চাঁদখালী বাজারের সরকারি জায়গায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে। নুরুল ইসলাম ও শফি গাজী নামের এলাকার দুই ভাই রাতের আঁধারে স্থাপনা নির্মাণ কাজ করছে এবং অবিলম্বে নির্মাণ কাজ বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে বাজার কমিটি ও এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় এলাকায় প্রতিবাদ সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্যদিকে আদালতের রায়ে বৈধভাবে নির্মাণ কাজ করছে বলে দাবি করেছে নির্মাণকারীরা। অভিযোগ সূত্রে এবং সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী চাঁদখালী বাজারের পশ্চিম পাশে সরকারি পাবলিক টয়লেটের পাশে সরকারি জায়গায় স্থাপনা (দোকান ঘর) নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এলাকাবাসী এবং বাজার কমিটির লোকজন অভিযোগ করেন, গত দুই দিনের ব্যবধানে বাথরুমে যাওয়ার রাস্তার দক্ষিণ পাশে দু’টি টিনশেডের ঘর এবং উত্তর পাশে একটি পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। রাতের আঁধারে এ কাজ করা হয়েছে বলে তারা জানান। চাঁদখালী ইউনিয়ন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আরজান আলী জানান, যেখানে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে, এই জায়গা সম্পূর্ণ সরকারি এবং খালি জায়গা পড়েছিল, রাতের আঁধারে এখানে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এ ধরনের নির্মাণ কাজ বন্ধে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সাবেক ছাত্রনেতা নাজমুল হুদা মিন্টু বলেন, একটি চক্র এভাবেই ঘর নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে আসছে। এতে সরকারি সম্পদ এবং বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি সঠিক তদন্ত এবং যাচাই-বাছাই করে বরাদ্দ দেওয়া-সহ অবৈধ নির্মাণ কাজ বন্ধে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান বলেন, বাজারের উন্নয়ন প্রয়োজন, এজন্য সবাইকে সহনশীল এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া দরকার। বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান গাজী বলেন, ৩০/৪০ লোক নিয়ে রাতের আঁধারে নির্মাণ কাজ করছে, এসব অবৈধ স্থাপনার কাজ বন্ধ না করা গেলে বাজারের অনেক ক্ষতি হবে এবং ধীরে ধীরে সরকারি সব সম্পত্তি বেদখল হয়ে যাবে। ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সরদার বলেন, বিষয়টি জানার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ করা হয় এবং বাজারে কেউ যাতে অবৈধ কোনো স্থাপনা গড়ে তুলতে না পারে সে ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় বিষয়টি তুলে ধরা হবে বলে তিনি জানান। এ প্রসঙ্গে নির্মাণকারীদের পক্ষে শহিদুল ইসলাম বলেন, "আমাদের অনুকূলে আদালতের ডিগ্রি এবং বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। আমরা সম্পূর্ণ বৈধভাবে নির্মাণ কাজ করছি।" সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইফতেখারুল ইসলাম শামীম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তিনি প্রতিবেদন দিলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি সার্ভেয়ার দিয়ে মেপে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উপজেলা ভূমি প্রশাসনের এ কর্মকর্তা জানান। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন বাজার কমিটি ও এলাকাবাসী।
*শামসুর রহমান ফাউন্ডেশন ও সিরাতুল হুদা ট্রাস্টের পক্ষ থেকে পাইকগাছা থানায় প্রিন্টার প্রদান*
ঐতিহ্যবাহী শামসুর রহমান ফাউন্ডেশন ও সিরাতুল হুদা ট্রাস্টের পক্ষ থেকে পাইকগাছা থানায় প্রিন্টার প্রদান করা হয়েছে। ফাউন্ডেশন ও ট্রাস্টের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় থানার ওসি রিয়াদ মাহমুদকে এটি প্রদান করেন শামসুর রহমান ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা, সিরাতুল হুদা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও দুর্নীতি দমন কমিশনের ডাইরেক্টর (অবসরপ্রাপ্ত) মেজর মোঃ মেসবাহুল ইসলাম। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা জামায়াতের সিনিয়র নায়েবে আমীর উপাধ্যক্ষ মাওঃ গোলাম সারোয়ার, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য কাজী তামজিদ আলম, প্রভাষক আব্দুল মোমিন সানা, অ্যাড. আব্দুল মজিদ, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মোঃ আলতাব হোসেন, সহকারী সেক্রেটারি মাওঃ আব্দুল খালেক, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি হাফেজ নুরে আলম সিদ্দিকী, জামায়াতের পৌর আমীর ডাঃ জিএম আসাদুল হক, সেক্রেটারি মোঃ মিজানুর রহমান, শামসুর রহমান ফাউন্ডেশনের উপজেলা সভাপতি তামিম রায়হান, সেক্রেটারি আল মামুন, সোহেল আহমেদ ও গাজী আব্দুল কাদের।
*পাগলী হল মা, পিতা হলো না কেউ; পাইকগাছায় মানসিক ভারসাম্যহীন এক মহিলা কন্যাসন্তানের মা হয়েছেন*
"পাগলী হল মা, পিতা হলো না কেউ।" পাইকগাছায় মানসিক ভারসাম্যহীন এক মহিলা (পাগলী) পিতার পরিচয় ছাড়াই একটি কন্যাসন্তানের মা হয়েছেন। বর্তমানে মা ও কন্যা উভয়ে সুস্থ আছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চলছে আলোচনা-সমালোচনা। মানুষরূপী পশুদের লালসার শিকারে ভারসাম্যহীন এক পাগলী হয়ে পড়ে অন্তঃসত্ত্বা। কোথা থেকে কতদিন সে এই এলাকায় এসেছে, তা কেউ জানে না। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালের সামনে মূল সড়কে। কোনো ডাক্তার কিংবা ধাত্রী ছাড়াই সন্তান প্রসব করে পাগলীটি। রাস্তার উপর ফুটফুটে ২.১ কেজি ওজনের কন্যাসন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। গ্রাম ডাক্তার আব্দুল হালিম জানান, তিনি কলকাতা থেকে পাইকগাছা যাচ্ছিলেন, পথিমধ্যে প্রাণিসম্পদ হাসপাতালের পাশে পাইকগাছা মূল সড়কে ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করে এক অজ্ঞাতনামা পাগলী। তখন তিনি নিজেই বাচ্চা এবং মাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রেহেনা পারভিন জানান, হাসপাতালে জরুরি বিভাগে এক প্রসূতি মা আসেন। দেখেন তার বাচ্চা ডেলিভারি হয়ে গেছে, কিন্তু ফুল আটকানো আছে। তখন দ্রুত তাকে হাসপাতালের লেবার ওটিতে নিয়ে বাচ্চাকে ফুলের নাড়ি থেকে আলাদা করা হয় এবং ফুল বের করে দেওয়া হয়। বর্তমানে ওই প্রসূতি ও তার সন্তান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। মা ও বাচ্চা সকলে সুস্থ এবং নিরাপদে আছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মাহবুবুর রহমান জানান, সকালের দিকে ভারসাম্যহীন এক মহিলা ডেলিভারি বিষয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে, আমরা সবকিছু সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করি এবং আমি নিজে গিয়ে পরিদর্শন করে এসেছি, মা ও বাচ্চা দুজনেই সুস্থ আছে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন হাসপাতালে গিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন মা ও জন্ম নেওয়া কন্যাশিশুকে দেখতে যান। এ সময় তিনি বলেন, "সবাই মিলে চেষ্টা করুন তার পরিচয়টা জানা যায় কিনা। আর সেটা সম্ভব না হলে সরকারিভাবে যা যা করা যায় তার জন্য সমাজসেবা অফিসারকে তিনি ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।" উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা অনাথ কুমার বিশ্বাস বলেন, "উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যারের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর