
তাবলিগ জামাতের দুইপক্ষের বিবাদ মেটাতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতিনিধি নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
বুধবার (৩০ জুলাই) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে তাবলিগের দুইপক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, তাবলিগের বিবাদ নিরসনে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে এ কমিটি হবে। কমিটিতে দুইপক্ষ তাদের প্রতিনিধি রাখবে। আশা করি, এই কমিটির মাধ্যমে উভয় পক্ষ একটি সমঝোতায় উপনীত হতে পারবে এবং সামনে সংঘাতের পথ বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা এটাই চাচ্ছি।
তিনি বলেন, তাবলিগ জামাতের দুইপক্ষ অনেক দিন ধরে আমাদের সঙ্গে বৈঠক করতে চাচ্ছিল, কিন্তু আমরা সময় দিতে পারছিলাম না। আজ তাদের সঙ্গে বৈঠকের দিন নির্ধারিত ছিল। যদিও সময় আলাদা আলাদা ছিল, কিন্তু আমরা একসঙ্গে বৈঠক করেছি। বৈঠকে দুইপক্ষের সম্মানিত মুরব্বিরা ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, কিছু সমস্যা দুইপক্ষের মধ্যে আছে, সেগুলোকে সহনীয় পর্যায়ে আনার জন্য অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আমরা কথা বলেছি। আগামী দিনে আমরা তাদের সঙ্গে আরও বৈঠক করব, একটু কাছাকাছি নিয়ে আসা। গত বছর একটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এ রকম পরিস্থিতি যাতে আগামী দিনে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, এ ব্যাপারে আমরা উভয় পক্ষের সহযোগিতা চেয়েছি।
খালিদ হোসেন বলেন, ২০২৪ সালে আমরা যখন বারবার বৈঠক করেছি, উভয় পক্ষ একসঙ্গে বসতে সম্মত ছিলেন না। এটাই প্রথম, উভয় পক্ষ দুজন উপদেষ্টার সঙ্গে বসে আলাপ-আলোচনা করার সুযোগ পেল।
দুইপক্ষ একসঙ্গে ইজতেমা করবে কি না—জানতে চাইলে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা অতদূর পর্যন্ত এখনো পৌঁছাইনি। এগুলো আলাপ-আলোচনার বিষয়।
তিনি জানান, সরকারের নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যস্ততা বেশি, আমার মন্ত্রণালয়ের অনেক কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে। আমরা সময় গুছিয়ে নিতে চাই। সময় স্বল্পতার কারণে দ্রুত কাজ করা সম্ভব হয়নি। আমরা যদি একটি কমিটি গঠন করে দিই, তাহলে তারা দুইপক্ষ কমিটির সঙ্গে বসবেন। দুইপক্ষ যদি একটি সমঝোতায় আসতে পারেন বা ঐকমত্যে উপনীত হন, তাহলে আমাদের কাছে রেফার করলে আমরা সেটা অনুমোদন দেব।
তিনি আরও বলেন, ইজতেমা একসঙ্গে করা, কাকরাইল মসজিদ—এসব বিষয় নিয়ে কমিটির আলোচনা থেকে যে ফলাফল বেরিয়ে আসবে, সেটাই আমরা বিবেচনা করব।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও মাওলানা সাদ কান্ধলভীপন্থী মাওলানা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম ও জুবায়েরপন্থী মাওলানা মামুনুল হকসহ অন্যান্য মুরব্বিরাও উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের তাবলিগ জামাতের দুটি পক্ষ রয়েছে। একপক্ষে রয়েছেন দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের বর্তমান মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভীপন্থীরা। তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কাকরাইল মসজিদের আহলে শুরা মাওলানা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম। আরেক পক্ষে রয়েছেন মাওলানা সাদ বিরোধী মাওলানা জুবায়ের আহমেদপন্থীরা (শুরায়ে নেজাম)।
গত বছর টঙ্গী ইজতেমা মাঠে বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটে।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর