
২০২৪ সালের ৪ ও ৫ই আগস্ট সাভার ও আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পুলিশি গুলিতে নিহতদের পরিবার আজও বয়ে বেড়াচ্ছে গভীর শোক ও বিচারহীনতার ক্ষোভ। সেই দুইদিনের আন্দোলনে রণক্ষেত্রে পরিণত হওয়া এই অঞ্চলে পুলিশের গুলিতে অর্ধশতাধিক মানুষ প্রাণ হারান এবং শতাধিক আহত হন।
এই নৃশংস ঘটনার পর দায়ের হয় ১২৫টি মামলা। কিন্তু প্রধান অভিযুক্তদের আজও গ্রেপ্তার না হওয়ায় ভুক্তভোগীরা বিচার পাওয়া নিয়ে হতাশ ও ক্ষুব্ধ।
গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের মধ্যে ছিলেন দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আলিফ আহম্মেদ সিয়াম। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৭ই জুলাই পুলিশের রাবার বুলেটে আহত হয়েও সুস্থ হয়ে আন্দোলনে ফের অংশ নেন তিনি। কিন্তু ৫ই আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান সিয়াম। তার বাবা বুলবুল কবীর ও মা তানিয়া আক্তার সন্তানহারা বেদনায় প্রতিদিনের জীবন পার করছেন।
এমআইএসটির ছাত্র ইয়ামিন ১৮ই জুলাই সাভারের পাকিজা মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর পুলিশের একটি এপিসি (Armored Personnel Carrier) থেকে তার নিথর দেহ রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়, যা আন্দোলনকারীদের হৃদয়ে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে।
সবচেয়ে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে আশুলিয়া থানার সামনে—সেখানে ছয়টি মরদেহ একসঙ্গে পোড়ানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
শহীদ শ্রাবণ গাজীর বাবা মান্নান গাজীসহ নিহতদের স্বজনরা দ্রুত বিচার দাবি করেছেন। তারা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির পাশাপাশি অভ্যুত্থানে হতাহতদের জন্য ক্ষতিপূরণ ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহ্বান জানিয়েছেন।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিনুর কবীর জানিয়েছেন, মামলাগুলো গুরুত্বের সঙ্গে তদন্তাধীন এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তবে পরিবারগুলো ন্যায়বিচার ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য প্রতিদিন অপেক্ষা করছে।
সর্বশেষ খবর