জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতায় জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এক বছরে পুলিশের বিরুদ্ধে ৭৬১টি মামলায় ১ হাজার ১৬৮ জন সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। এরমধ্যে ৬১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সোমবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে আয়োজিত ‘নতুন বাংলাদেশ: কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন-পরবর্তী এক বছরের ওপর পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে টিআইবি ফেলো শাহজাদা এম আকরাম বলেন, ছাত্র ও জনতার ওপর হামলা, হত্যার নির্দেশদাতা ও ইন্ধনদাতাদের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে ১ হাজার ৬০২টি মামলা হয়েছে, যার মধ্যে ৬৩৮টি হত্যা মামলা। বিগত সরকারের ৮৭ জন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার ৭০ শতাংশে তদন্তের অগ্রগতি ‘সন্তোষজনক’ এবং ৬০-৭০টি হত্যা মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

তিনি জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অধীনে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ৪২৯টি অভিযোগ এবং ২৭টি মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। শেখ হাসিনাসহ ২০৬ জন আসামির মধ্যে ৭৩ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলেও ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম ধীরগতিতে চলছে। জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় অভিযুক্তদের বিচার চলমান রয়েছে।

শাহজাদা এম আকরাম আরও বলেন, শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠিত হয়েছে এবং বিচার শুরু হয়েছে। ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দায়ের হওয়া প্রায় সব হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ফেলো মো. জুলকারনাইন, ফারহানা রহমানসহ অন্যান্য গবেষক ও বিশিষ্টজন।

টিআইবি বলেছে, কিছু বিভাগীয় শাস্তির বাইরে পুলিশের বিরুদ্ধে কার্যকর জবাবদিহি বাস্তবায়নে সরকারের সদিচ্ছা ও সক্ষমতার ঘাটতি রয়েছে, যা উদ্বেগজনক।