
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী হানিয়াম মারিয়া বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালানোর ঘটনাই সাধারণ মানুষকে রাজপথে নামতে বাধ্য করেছে। এটি কোনো রাজনৈতিক সমন্বয়কের আহ্বানে নয়, বরং মানবিক চেতনার জোরেই ঘটেছিল।
রোববার (৩ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে অধ্যাপক মারিয়া লেখেন, ‘‘সাধারণ মানুষ রাজনীতির জটিল হিসাব বোঝে না। তারা সন্তানের মতো শিক্ষার্থীদের গুলিতে লুটিয়ে পড়তে দেখে চুপ করে বসে থাকতে পারেনি। সেই কারণেই তারা রাস্তায় নেমেছিল।’’
এক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে অধ্যাপক মারিয়া জানান, সেদিন আন্দোলনে অংশ নেওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী আবেগঘন কণ্ঠে তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী দেলোয়ার বলেন, ‘‘আমার ডাকে কেউ আন্দোলনে এসে যদি প্রাণ হারিয়ে থাকে, এ কথা ভাবলেই অপরাধবোধে ভুগি।’’
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক মারিয়া বলেন, ‘‘ছোট্ট একটি ছেলে-মেয়ে কত কষ্ট বুকে চেপে আছে! কত নাম না জানা আন্দোলনকারী ছিল, যাদের খোঁজ কেউ রাখেনি। যারা প্রাণ হারিয়েছে, তাদের নামও কোথাও নথিভুক্ত হয়নি।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এই শিক্ষার্থীরা কোনো ব্যক্তিগত লাভের আশায় আন্দোলনে অংশ নেয়নি। তারা নেমেছিল ন্যায়ের দাবি ও পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে।’’
স্ট্যাটাসে অধ্যাপক মারিয়া উল্লেখ করেন, ‘‘অনেকে এখন জুলাই মাসকে রাজনীতির হাতিয়ার বানালেও, প্রকৃত ত্যাগ স্বীকারকারীরা আজও আড়ালে। তাদের আত্মত্যাগ যেন কিছু লোকের স্বার্থসিদ্ধির মাধ্যম না হয়, সেটিই আমাদের কাম্য।’’
পরিশেষে তিনি দেলোয়ার, ফারিয়া এবং নাম না জানা অন্যান্য আন্দোলনকারীর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়ে লেখেন, ‘‘এই শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগ যেন কখনো বৃথা না যায়— এটাই আমার প্রত্যাশা।’’
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর