
বিভিন্ন গোষ্ঠীর দ্বারা একের পর এক হামলা বরাবরই পাকিস্তানের স্বাভাবিক জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। এ জন্য পাকিস্তানে বেড়ে ওঠা বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করার জন্য বিশ্বের দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়ে আসছিল পাকিস্তান। অবশেষ পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে তাদের অন্যতম মিত্র যুক্তরাষ্ট্র।
পাকিস্তানে মারাত্মক হামলার পর বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এবং এর অঙ্গ সংগঠন মাজিদ ব্রিগেডকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন বা এফটিও হিসেবে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার (১১ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। খবর জিও নিউজের।
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে মাজিদ ব্রিগেডকে বিএলএ-এর পূর্ববর্তী তালিকাভুক্ত বিশেষভাবে মনোনীত বৈশ্বিক সন্ত্রাসী (এসডিজিটি) গোষ্ঠীর একটি উপনাম হিসেবেও যুক্ত করা হয়েছে। ২০১৯ সালে প্রথম এসডিজিটি হিসেবে মনোনীত বিএলএ তখন থেকে একাধিক হামলার দায় স্বীকার করে আসছে। এর মধ্যে মাজিদ ব্রিগেড কর্তৃক পরিচালিত আত্মঘাতী বোমা হামলাও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
২০২৪ সালে, করাচি বিমানবন্দর এবং গোয়াদর বন্দর কমপ্লেক্সের কাছে আত্মঘাতী হামলার পিছনে তাদের হাত ছিল বলেও দাবি করে গোষ্ঠীটি। চলতি বছরের শুরুতে মার্চ মাসে কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন ছিনতাইয়েরও দায় স্বীকার করে বিএলএ। ওই ঘটনায় ৩১ জন বেসামরিক ব্যক্তি এবং নিরাপত্তা কর্মী নিহত হন এবং ৩০০ জনেরও বেশি যাত্রীকে জিম্মি করা হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, এই তালিকাভুক্তি সন্ত্রাসবাদ দমনে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে। তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে ব্যাহত করার জন্য এই ধরনের পদক্ষেপই কার্যকর উপায়।
সম্প্রতি জুলাই মাসে বিএলএ এবং এর মাজিদ ব্রিগেডকে তালিকাভুক্ত করার দাবি করা হয়েছিল পাকিস্তানের পক্ষ থেকে। ওই সময় ২২ এপ্রিল ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র।
এই ঘটনাটি কয়েক দশকের মধ্যে দুই পারমাণবিক-সশস্ত্র প্রতিবেশীর মধ্যে সবচেয়ে তীব্র সংঘর্ষের সূত্রপাত করে, কারণ নয়াদিল্লি এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে। তবে, তা অস্বীকার করে ইসলামাবাদ। পাকিস্তান বিএলএ এবং মাজিদ ব্রিগেডকে ফিতনা আল-হিন্দুস্তান বলে অভিহিত করে বলেছে, বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো ভারতের মদদে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ পরিচালনা করছে।
গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য নিউজ জানিয়েছে, ভারতের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র) সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদকে ইন্ধন জোগাতে বেলুচিস্তানে তার সহযোগীদের সক্রিয় করেছে। তারা গোয়াদর, কোয়েটা এবং খুজদারে হামলা চালানোর জন্য বিএলএর মতো গোষ্ঠীগুলোকে ব্যবহার করছে।
বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী মীর সরফরাজ বুগতি এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি ফেডারেল সরকার এবং সেনাবাহিনী প্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে এ জন্য কৃতিত্ব দিয়েছেন। আসিম মুনির সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন এবং সিনিয়র রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকেও অংশ নিয়েছেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর