
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার জোড়গাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে সম্পদ বিক্রি, অর্থ আত্মসাৎ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের জারিকৃত সরকারি পরিপত্র অমান্য করাসহ বিভিন্ন দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিরুদ্ধে সাবমারসিবল পাম্প ও সৌরবিদ্যুতের ব্যাটারি বিক্রি, পজিশনের ভাড়া বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আত্মসাৎ, বাজার থেকে প্রশ্নপত্র ক্রয় করে অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত ১৪ই জুলাই বদিউজ্জামান নামের একজন অভিভাবক শেরপুর উপজেলা শিক্ষা অফিস বরাবর এই অভিযোগটি জমা দেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক সরকারি পরিপত্র উপেক্ষা করে বাজার থেকে কেনা প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা নিচ্ছেন, যা শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার প্রতি অনীহা সৃষ্টি করছে। পরীক্ষার প্রবেশপত্র বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে গড়ে ১ হাজার ৮০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে, যা নিম্ন আয়ের পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এতে অনেক শিক্ষার্থীর পড়াশোনা ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমিতে নির্মিত সাতটি দোকানঘরের ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা জামানত নেওয়া হলেও তা ব্যাংকে জমা না করে প্রধান শিক্ষক ব্যক্তিগতভাবে আত্মসাৎ করেছেন। ওয়াশরুমের জন্য দেওয়া সাবমারসিবল পাম্প এবং ছয়টি সৌরবিদ্যুতের ব্যাটারির মধ্যে একটি বিক্রি করে সেগুলোর অর্থও তিনি আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ। ফরম পূরণ, মাসিক বেতন, পজিশনের ভাড়া এবং অন্যান্য আয়-ব্যয়ের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক হিসাব রাখা হয় না, যা বিদ্যালয়ের উন্নয়নে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। সহকারী প্রধান শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও তাঁর অনুপস্থিতিতে জুনিয়র শিক্ষককে দিয়ে প্রশাসনিক কাজ করানোর কারণে শৃঙ্খলা ভঙ্গেরও অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় অভিভাবক আলিম, মাফু, রাজু, সোলাইমানসহ অনেকে বলেন, এসব অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মুখে পড়ছে। তাঁরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, অভিযোগগুলো মিথ্যা এবং তিনি অভিযোগের ভিত্তিতে জবাবও দিয়েছেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। একাডেমিক অফিসার জাকির হোসেনকে তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অচিরেই তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাব। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর