• ঢাকা
  • ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৩ মিনিট পূর্বে
জিসান নজরুল
ইবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১৪ আগস্ট, ২০২৫, ১১:২৫ দুপুর

ইবিতে বিএনপিপন্থি শিক্ষকের সঙ্গে শিবির নেতাকর্মীদের বাগবিতণ্ডা

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

*ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লোক ও প্রশাসন বিভাগে নবাগত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গিয়ে শাখা ছাত্রশিবির নেতাদের সঙ্গে এক শিক্ষকের বাকবিতণ্ডা হয়। এতে শিবির নেতাদের বিরুদ্ধে শিক্ষককে অপমানের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে মীর মশাররফ হোসেন অ্যাকাডেমিক ভবনে এ ঘটনা ঘটে।*

জানা যায়, নির্ধারিত সময়ে ক্লাস নিতে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করেন বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন ‘সাদা দলের’ আহ্বায়ক এবং বিভাগের প্রফেসর ড. এ কে এম মতিনুর রহমান। তিনি শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত শিবির নেতাদের পরিচয় জানতে চান এবং প্রশ্ন করেন, "তোমরা কারা? এখানে কেন এসেছ?" জবাবে নেতারা জানান, তারা শাখা ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে বিভাগীয় সভাপতির অনুমতি নিয়ে নবীনদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, শিবিরের কিছু নেতাকর্মী আমাদের ক্লাসরুমে ঢুকে তাদের সংগঠন সম্পর্কে কথাবার্তা বলছিলেন। বিভাগের স্যার ক্লাসে প্রবেশ করে প্রথমে ওনারা কারা জিজ্ঞেস করে এবং "গেট আউট" বলে বের হতে বললেন। তখন শিবিরের নেতাকর্মীরা বলেন, "বিভাগের সভাপতির অনুমতি নিয়েছি, একটু শেষ করে বের হচ্ছি" বলে স্যারকে জানান। এসময় স্যার বলেন, "এটা সভাপতির বিষয় না, এটা আমার ক্লাসের শিডিউল" বললে স্যারের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে স্যার ক্লাস ক্যানসেল করে চলে যান।

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, ক্লাস থেকে বের হয়ে মতিন স্যারসহ শিবিরের সবাই করিডরের দিকে আসেন। ওখানে সভাপতি স্যারও আসেন। সভাপতি স্যারকে মতিন স্যার জিজ্ঞেস করেন, "আমার ক্লাসের সময় এদেরকে ঢোকার অনুমতি কেন দিয়েছেন?" এরপর শিবিরের পোলাপান বলা শুরু করে, "স্যার আপনি এভাবে আমাদের অপমান করে কেন বের করে দিলেন? একটা সংগঠনের সেক্রেটারিকে এভাবে আপনি গেট লস্ট বলে বের করে দিতে পারেন না।" এসময় শিবিরের কয়েকজনকে উচ্চস্বরে বাকবিতণ্ডা ও স্যারকে জেরা করতে দেখা যায়। এছাড়াও স্যার বারবার বলার চেষ্টা করেন, "তোমরা কোন সংগঠনের সেটা আমার দেখার বিষয় না, বরং আমার দেখার বিষয় যে তোমরা ছাত্র।"

ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক শিবির নেতা বলেন, আমরা প্রায় ৭-৮ জনের মতো বিভাগে গিয়েছিলাম। আমরা জানতাম না ক্লাস ছিল। বিভাগের সভাপতির অনুমতিক্রমে আমরা গিয়েছিলাম। সভাপতি যদি জানাতেন ক্লাস হবে তাহলে আমরা যেতাম না। আমরা ৫-৭ মিনিটের মতো আলোচনা করেছি। তখন প্রফেসর মতিনুর রহমান স্যার ক্লাসে প্রবেশ করেন। পরে তিনি উচ্চকণ্ঠে আমাদের জানান, "তোমরা কারা? এখানে কেন?" পরে শিবির সেক্রেটারি ইউসুব ভাই বলেন, "আমরা ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান স্যারের অনুমতি নিয়ে নবীন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিচিত হতে এসেছি।" তখন স্যার বললেন, "ক্লাসের সময় তোমাদের এখানে কি? বের হও, এখনই বের হয়ে যাও।" তখন শিবির সেক্রেটারি স্যারকে জানান, "ঠিক আছে স্যার, আমরা চলে যাচ্ছি।"

শিবির নেতা আরও জানান, আমরা বাইরে বের হওয়ার পরে কয়েকজনকে স্যার জিজ্ঞাসা করেন, "এখানে কার থেকে অনুমতি নিয়ে এসেছ?" তখন আমরা বিভাগের সভাপতি স্যারের অনুমতি নিয়ে এসেছি বলে জানাই। তখন তিনি জানান, "সভাপতি অনুমতি দেওয়ার কে?" পরে বিষয়টি নিয়ে স্যারের সঙ্গে কিছু কথাকাটাকাটি হয়। পরে বিভাগের সভাপতি ও প্রক্টর স্যারের উপস্থিতিতে বিষয়টির মীমাংসা করা হয়।

ড. ফকরুল ইসলামের কক্ষে বিকেল ১টার দিকে বৈঠকে বসে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। বৈঠকে প্রফেসর ড. এ কে এম মতিনুর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. বেগম রোকসানা মিলি, প্রক্টর প্রফেসর ড. শাহীনুজ্জামান, বিভাগের প্রফেসর ড. লুৎফর রহমান, ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহমেদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট, শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান, সেক্রেটারি ইউসুব আলীসহ অন্য শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. ফকরুল ইসলাম বলেন, আমি জানতাম না ওই সময়ে কারোর ক্লাস আছে। ক্লাসের বিষয়টি জানলে আমি তাদেরকে সেখানে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করতাম না। এই বিষয়টা একটু ভুল হয়েছে। পরে সবাইকে নিয়ে বসেছিলাম। শান্তিপূর্ণভাবে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে। তারা শিক্ষকের কাছে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চেয়েছে।

বিভাগের প্রফেসর ও সাদা দলের আহ্বায়ক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান বলেন, শিডিউল অনুযায়ী বেলা ১২টার দিকে আমার ক্লাস ছিল। আমি শ্রেণিকক্ষে যাওয়ার পর তাদেরকে দেখি। চিনতামও না যে তারা আসলে কারা। পরে জানতে পেরেছি তারা একটি ছাত্রসংগঠনের পক্ষ থেকে আসছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রসংগঠন কথা বলতেই পারে, কিন্তু তাদের তো নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেইনটেইন করে সেটা করতে হবে। বিভাগের সভাপতির উচিত ছিল তাদেরকে অনুমতি দেওয়ার আগে কারোর ক্লাস শিডিউল আছে কি না সেটা দেখা। তবে তারা উপস্থিত হয়ে ক্ষমা চেয়েছে। ক্ষমা চাওয়ার পর আসলে কিছু করার থাকে না। তবে একজন শিক্ষকের সঙ্গে যেমন আচরণ করা হয়েছে সেটা প্রত্যাশিত ছিল না। এটা দুঃখজনক।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]