• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ২২ আগস্ট, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ২২ সেকেন্ড পূর্বে
শাহীন মাহমুদ রাসেল
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২২ আগস্ট, ২০২৫, ১২:২৭ রাত

সীমান্ত পেরিয়ে নতুন করে ঢুকছে রোহিঙ্গারা

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আবারও সহিংসতা শুরু হয়েছে। আরাকান আর্মি ও দেশটির সেনাদের সংঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এরই জের ধরে আবারও বাংলাদেশমুখী হচ্ছে রোহিঙ্গারা। সাম্প্রতিক সময়ে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরের কয়েকটিতে নতুন রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেওয়ার খবর মিলেছে। সরকারি হিসাবে তাদের নাম নেই। স্থানীয় সূত্র বলছে, ভেলায় চড়ে নাফ নদ পাড়ি দিয়ে শতাধিক রোহিঙ্গা কদিনেই এসেছে বাংলাদেশে। সীমান্ত পেরিয়ে ঢোকার অপেক্ষায় আছে কয়েক হাজার মানুষ।

কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় সাড়ে ১২ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। এর মধ্যে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে কয়েক মাসে এসেছিল অন্তত ৮ লাখ রোহিঙ্গা। তখনকার জাতিগত নিপীড়নের ঢেউ এখনো থামেনি। নতুন করে অনুপ্রবেশ ঘটছে ধাপে ধাপে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, শুধু গত সোমবারেই অন্তত ৩০ জন রোহিঙ্গা নাফ নদ পাড়ি দিয়ে এসেছে। তাদের বেশির ভাগই উখিয়ার ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। এভাবে প্রতিদিনই ধীরে ধীরে বাড়ছে অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা।

বিজিবি জানিয়েছে, সীমান্তে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। তবে সীমান্ত চোরাপথ আর নৌপথে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকানো যাচ্ছে না।

জানা গেছে, রাখাইনের বুথিডং ও মংডু এলাকায় বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা জড়ো হয়েছে। তারা কলাগাছের ভেলা কিংবা ছোট নৌকায় চড়ে নাফ নদ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকতে চাইছে।

স্থানীয় সূত্র মতে, মংডু সীমান্তে এখনো দুই হাজারের বেশি রোহিঙ্গা অপেক্ষায় আছে অনুপ্রবেশের সুযোগের জন্য।

রোহিঙ্গাদের অভিযোগ, আরাকান আর্মির সদস্যরা তাদের জীবনে নতুন দুর্ভোগ বয়ে এনেছে। তারা রোহিঙ্গাদের গরু-ছাগল দখল করছে, গাছ কেটে বিক্রি করছে, এমনকি প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণির প্রতিটি ছাত্রছাত্রীর কাছ থেকে মাসে ১০ থেকে ২০ হাজার কিয়েট চাঁদা আদায় করছে। এ ছাড়া কৃষিকাজ, মাছ চাষ, ব্যবসা- সব খাতেই চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে ট্যাক্স।

স্থানীয় সূত্র বলছে, আরাকান আর্মির সদস্যরা আর্থিক সংকটে পড়ে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ির বড় গাছ কেটে বোঝাই করে নাফ নদ পার হয়ে এনে বিক্রি করছে বাংলাদেশ সীমান্তের বাজারে।

তাদের মতে, আলোচনা আর প্রতিশ্রুতির ঘূর্ণিপাকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন অনিশ্চয়তায় আটকে আছে। আশ্রয়শিবিরে দিন দিন বেড়েই চলেছে মানবিক সংকট। আন্তর্জাতিক মহলের উদাসীনতায় ভরসা হারাচ্ছে রোহিঙ্গারা। কক্সবাজারে তাদের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান ক্রমেই বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে স্থানীয়দের জন্য। প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা এখনো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ, সংকট সমাধানে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়।

রোহিঙ্গা কমিউনিটির সংগঠন কমিটি ফর পিস অ্যান্ড রিপ্যাট্রিয়েশনের (আরসিপিআর) সভাপতি দীল মোহাম্মদ বলেন, আমরা শান্তিতে বাঁচতে চাই, লড়াই করতে নয়। আমাদের চূড়ান্ত দাবি, নিজ দেশে ফেরা।

তিনি জানান, রোহিঙ্গাদের শরণার্থী জীবনের ইতি টেনে আরাকানে ফেরার বিকল্প নেই। নানা মতভেদ থাকলেও দেশের প্রতি টান ও ফেরার দাবি সবারই একই। তার মতে, রোহিঙ্গারা নিজেদের পরিচয় খুঁজে পায় ‘আরাকানের রোহিঙ্গা’ হিসেবেই।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ২৫ আগস্ট কক্সবাজার সফরে আসছেন। গত এক বছরের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন তিনি।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইমরান হোসাইন সজীব জানান, ইনানী সেনা রেস্টহাউসে অনুষ্ঠিত হবে এই বৈঠক। এতে আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ দেড় শতাধিক ব্যক্তি অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আগে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

রোহিঙ্গা নেতারা বলছেন, মিয়ানমারের নোবেলজয়ী অং সান সু চি রোহিঙ্গাদের রক্ষা করতে পারেননি। কিন্তু বাংলাদেশের নোবেলজয়ী ইউনূস জাতিসংঘের মাধ্যমে অন্তত প্রত্যাবাসনের পথ সুগম করতে পারবেন- এমন আশা করছেন তারা।

প্রায় আট বছর ধরে বাংলাদেশে আটকে থাকা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো যায়নি একবারও। আন্তর্জাতিক মহলের নানা তৎপরতা সত্ত্বেও বাস্তবে কার্যকর হয়নি কোনো প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা। এরই মধ্যে নতুন অনুপ্রবেশ বাড়ছে। সীমান্তে নজরদারি কড়া হলেও নৌপথে রোহিঙ্গারা ঢুকে পড়ছে প্রতিনিয়ত।

ফলে বাংলাদেশের মানবিক দায়ের সীমা কোথায়? আবারও লাখো রোহিঙ্গা এলে তাদের সামলাবে কে? আর মিয়ানমার কি সত্যিই রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ তৈরি করবে? এসব প্রশ্নের উত্তর এখনো অনিশ্চিত।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]