
চুয়াডাঙ্গায় ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি ও কাশির প্রকোপ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন জ্বর নিয়ে বহু মানুষ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন। রোগীর চাপ এতটাই বেশি যে হাসপাতালের মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ডের মেঝেতেও অনেককে অবস্থান নিতে হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পর্যাপ্ত ওষুধের সরবরাহ রয়েছে।
চিকিৎসকদের মতে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভাইরাসজনিত জ্বর, সর্দি ও কাশির প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর সঙ্গে ডেঙ্গুর থাবাও রয়েছে, ফলে বিভিন্ন ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। গতকাল বুধবার সদর হাসপাতাল সরেজমিনে পরিদর্শন করে এই তথ্য জানা গেছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সদর হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ৩০০ রোগী আসছেন, যাদের অধিকাংশই জ্বর, সর্দি ও কাশির সংক্রমণে আক্রান্ত। রোগীর তুলনায় শয্যার সংকট থাকায় অনেককেই মেঝেতে অবস্থান করে চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে। তবে হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধের সরবরাহ রয়েছে। এই জ্বরের প্রকোপ সাধারণত সাত দিন স্থায়ী হচ্ছে, তবে এরপরও শরীর দুর্বলতা ও ব্যথা নিয়ে অনেককে পুনরায় হাসপাতালে আসতে হচ্ছে।
প্রতিদিন হাসপাতালে আসা জ্বর আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে ডাক্তার ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। চিকিৎসকরা জ্বর আক্রান্ত রোগীদের বাড়িতে থাকার এবং নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
রোগীর স্বজনেরা জানান, হাসপাতালে বাচ্চা নিয়ে এসে কোনো শয্যা খালি না পাওয়ায় মেঝেতেই ভর্তি হতে হচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে তাঁদের অভিযোগ। একজন রোগীর স্বজন বলেন, "একদিকে জ্বর, অন্যদিকে এত রোগী। চিকিৎসা নিতে এসে হিমশিম অবস্থা। হাসপাতালের চারপাশ নোংরা ও আবর্জনাময়।" ডাক্তার ও নার্সরা দেরিতে আসছেন বলেও কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন।
চিকিৎসা নিতে আসা সাইদুল ইসলাম বলেন, "জ্বর যাচ্ছে না। গ্রামের ওষুধ খেয়ে কাজ হচ্ছে না। শেষে না পেরে হাসপাতালে আসতে হলো। এখন ডাক্তার দেখালাম, দেখা যাক শরীর সুস্থ হয় কি না।" আরেক রোগী হাসনা বেগম জানান, "কয়দিন ধরে হঠাৎ করে শরীর দুর্বল হয়ে ব্যথা শুরু হয়। তারপর জ্বর। জ্বর মেপে দেখলাম ১০৪ ডিগ্রি। এই জ্বর ভাইরাসের কারণে হচ্ছে বলে ডাক্তার জানালেন। তবে চিন্তার কিছু নেই। এসময় জ্বর সবারই আসছে। ওষুধ দিয়েছে, আশা করি সুস্থ হয়ে যাব।"
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, "জ্বরের সংক্রমণ খুবই হচ্ছে। জ্বর আক্রান্ত রোগীদের আমরা বহিঃবিভাগে চিকিৎসা দিচ্ছি। প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র আমরা দিচ্ছি, তাতে কোনো সংকট নেই। মূলত একটি ভাইরাসের কারণে জ্বর হচ্ছে। প্রতিদিনই দুই শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। এখানে ডাক্তার ও নার্সরা হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন। তবে এই জ্বর খুবই মারাত্মক সংক্রমণ অবস্থায় যাচ্ছে না।"
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর