
নবীগঞ্জের সিএনজি পাম্পে অগ্নিকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হয়েছে। নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে অবস্থিত 'মেসার্স আউশকান্দি সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনে' ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিস্ফোরক পরিদপ্তরের সহকারী পরিদর্শক মোস্তফা ফারুক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। গতকাল তিনি পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকে জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বাসের মধ্যে নিম্নমানের কিটস ব্যবহারের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। পরিদর্শন শেষে ঘটনার রহস্য উদঘাটন নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
এক বিজ্ঞপ্তিতে পরিদর্শক মোস্তফা ফারুক বলেন, "২১ আগস্ট ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে 'হোসেন এন্টারপ্রাইজ' নামক একটি যাত্রীবাহী বাসে সিএনজি ভরার সময় সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিকেজ হয়ে যায়। এতে পুরো স্টেশন প্রাঙ্গণে গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে এবং সাদা মেঘের মতো আবরণ তৈরি হয়। এ সময় স্টেশনে থাকা অটোরিকশা বা গাড়ির ইঞ্জিনের স্পার্ক থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রতীয়মান হয়।"
তিনি আরও জানান, দেশে ২০০১ সাল থেকে সিএনজি ব্যবহার শুরু হয়। সিএনজি সিলিন্ডারের মেয়াদকাল ২৫ বছর হলেও প্রতি ৫ বছর অন্তর রি-টেস্ট করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সিলিন্ডার রূপান্তরের পর অধিকাংশ গাড়ি মালিক সিলিন্ডারের রি-টেস্ট বা সার্ভিসিং করেন না। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে এবং জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটছে।
প্রতিকার ব্যবস্থা হিসেবে তিনি প্রস্তাব করেন— মোটরযানের ফিটনেস সনদ গ্রহণের সময় সিলিন্ডারের রি-টেস্ট সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করতে হবে। সিএনজি বিধিমালা ২০০৫ এর ৭৮ নং বিধি অনুসারে প্রতি তিন মাস অন্তর স্টেশনের সরঞ্জামাদি পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। একই বিধিমালার ৭৯ নং বিধি অনুযায়ী রিফুয়েলিং স্টেশন নিরাপত্তা বিষয়ক বার্ষিক জরিপ করা বাধ্যতামূলক করতে হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এসব নিয়ম-কানুন কঠোরভাবে কার্যকর করা গেলে এ ধরনের দুর্ঘটনা অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, ২১ আগস্ট ভোর ৫টা ৩০ মিনিটের দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে আউশকান্দি সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনে পুরোনো ফিটনেসবিহীন বাসে গ্যাস ভরার সময় হঠাৎ বিস্ফোরণে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তেই তা আশপাশে রাখা গাড়িতে ছড়িয়ে যায়। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ, বাহুবল ও ওসমানীনগর থেকে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে সকাল ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ দুর্ঘটনায় ৯টি অটোরিকশা, একটি বাস, দুটি মোটরসাইকেলসহ পাম্প পুড়ে যায়। গুরুতর আহত হন ছয়জন। তাদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আগুনে প্রায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাম্প কর্তৃপক্ষ।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর