
বরগুনার পাথরঘাটায় ৭২নং উওর-পশ্চিম জালিঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খায়রুল আলমের কাছে সাংবাদিক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় কিরণ হাওলাদার ও রনজিত মিস্তি কে প্রধান করে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীপক কুমার বিশ্বাস।
জানাযায়, গত (২৪শে আগষ্ট) ৭২নং উওর-পশ্চিম জালিঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে প্রধান শিক্ষক কতৃক মাঠে বীজতলা করা হয়,এমনি সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে সাংবাদিক গেলে তাদের লাঞ্ছিত করে এবং ধাক্কা দিয়ে অফিস কক্ষ বন্ধ করে রাখে। এসময় পায়ে আগাত পান আরটির পাথরঘাটা উপজেলা প্রতিনিধি তাওহীদুল ইসলাম শুভ।
এসময় উওর-পশ্চিম জালিঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রদীব বলেন, আমাদের প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে স্কুলের পাশের মোসলেম দাদু এই ধানের বীজ করেছেন।
ঐ স্কুলের আরেক ছাত্র ইদ্রিস সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আগে স্কুল মাঠে খেলা করতে পারতাম এখন এই ধানের বীজ করার কারনে খেলাধুলা করতে পারিনা।
এছাড়াও উওর-পশ্চিম জালিঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খায়রুল আলমের নামে অভিযোগ করে একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, "খাইরুল আলম স্যার আমাদের ক্লাসে বসে শুধু ঘুমায় এবং মোবাইল ফোনে ভিডিও দেখে, এবং আমাদের বেদ দিয়ে মারধর করে।"
তবে সাংবাদিকের লাঞ্চিতর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সমকালের পাথরঘাটা উপজেলা প্রতিনিধি ইমাম হোসেন নাহিদ বলেন, "সাংবাদিক কোন ঘটনা ঘটলে সেখানে যাবে এটাই স্বাভাবিক তবে সাংবাদিকের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ কোন ভাবেই কাম্য নয়,এর সঠিক তদন্ত করে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হোক।"
সাংবাদিকের সাথে শিক্ষকের এমন আচরণে যুগান্তর এর পাথারঘাটা উপজেলা প্রতিনিধি মোস্তফা চৌধুরী বলেন,
"একজন প্রধান শিক্ষক হয়ে সাংবাদিকের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ কোন ভাবে কাম্য নয়। অতি দ্রুত যেন কতৃপক্ষ একটি ব্যাবস্থা গ্রহন করে।"
বাংলাদেশ প্রতিদিনের পাথরঘাটা উপজেলা প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, "সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহ করবে এটাই সাংবাদিকদের কাজ। তথ্য অনুসন্ধান করতে সাংবাদিকদের অনুসন্ধানেরসাংবাদিকদের অনুসন্ধানে যেতেই হবে যদি কেউ তথ্য দিতে না চায় তাহলে সে রকমের জবাব দিবে তবে একজন সাংবাদিকের সাথে এমন আচরণ দুঃখজনক এবং জাতী শুদ্ধচার কৌশলের বহির্ভূত।"
সাংবাদিক লাঞ্ছিতর ঘটনায় পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিন সোহেল বলেন, "সাংবাদিকের ক্যামেরায় হাত ও ধাক্কা দেওয়া এটা কোন ভাবেই কাম্য নয়। সাংবাদিকের পেশাগত ও নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে সত্যের সন্ধান, উদ্ঘাটন এবং জনসমুক্ষে প্রকাশ করা। তবে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা, কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।"
পাথরঘাটা মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি ও আমার দেশ পত্রিকার পাথরঘাটা উপজেলা প্রতিনিধি জাকির হোসেন খান বলেন, "যেখানে অনিয়ম দুর্নীতি সেখানেই সাংবাদিক যাবে স্বাভাবিক কিন্তু সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা লাঞ্চিত করা দুঃখজনক, এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।"
পাথরঘাটা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু সালেহ জসিম বলেন, একজন সংবাদকর্মী তার পেশাদারিত্ব পালন করতে সংবাদ সংগ্রহের জন্য সকলের স্থান থেকেই তথ্য সংগ্রহ করবেন। যেখানে অনিয়ম সেখানেই সংবাদ কর্মী, এমনটাই হওয়া উচিত, আর এ কাজ করতে গিয়েই পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের উত্তর-পশ্চিম জালিয়াঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক মাঠ দখল করে ধান রোপণের জন্য ধানের বীচ তলা তৈরি করছে এমন সংবাব্দ পেয়ে সেখানে যান। বিষয়টি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করার সময় তার উপর চড়াও হন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাইরুল আলম। এ সময় এই সংবাদকর্মীর বুম কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এত সাহস তারা পায় কোথায়? এটি একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। সাংবাদিকদের উপর এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার বিষয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই, সাথে সাথে ওই প্রধান শিক্ষক কতৃক মাঠ দখল এবং ধানের বীজতলা তৈরি করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিনোদন কেড়ে নেয়ার জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
নিউজ২৪ এর সাংবাদিক সুমন সিকদার বলেন, "সাংবাদিক তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে একজন শিক্ষকের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার খুবই দুঃখজনক। দাবি থাকবে এর যেন সঠিক তদন্ত করা হয়।"
এ বিষয়ে সময় টেলিভিশনের বরগুনার স্টাফ রিপোর্টার সাইফুল মিরাজ বলেন, "সাংবাদিকরা কারও প্রতিপক্ষ নয়, তারা শুধু সত্য তুলে ধরেন। কিন্তু সহকর্মী শুভর সঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যে আচরণ করেছেন, তা গণমাধ্যমের জন্য গুরুতর হুমকি এবং স্বাধীন ও প্রভাবমুক্ত সংবাদ পরিবেশনের জন্য বড় বাঁধা। একজন শিক্ষক কখনোই কোনো সাংবাদিকের সঙ্গে এমন ব্যবহার করতে পারেন না। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানাই।"
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও এন টিভির জেলা প্রতিনিধি সোহেল হাফিজ বলেন, "সাংবাদিকদের সঙ্গে এরকম আচরণ কোন ভাবেই কাম্য নয়। এর আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।"
এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বরগুনার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর সালেহ বলেন, "একজন শিক্ষকের এমন আচরণ কোন ভবেই কাম্য নয়।এর সঠিক সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হোক।"
এ বিষয়ে জেলা এ বিষয়ে জেলা প্রতিনিধি রিয়াজ হোসেন মুসা বলেন," যেখানে দুর্নীতি সেখানে তথ্যের জন্য যাবে কিন্তু একজন সাংবাদিক পাথরঘাটা প্রতিনিধি আর টিভি শুভর সঙ্গে এ ধরনের আচরণ কড়াই এর আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এবং তাদের কর্তৃপক্ষ দূরত্ব যাতে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।"
এ বিষয়ে স্টার নিউজ ও জাগো নিউজের বরগুনা জেলা প্রতিনিধি নূরুল আহাদ অনিক বলেন, "সংবাদ সংগ্রহে বাধা ও শারিরীক ভলে লাঞ্ছিত একেবারেই গ্রহন যোগ্য নয়। আমরা আশা করি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ যথাতথ ব্যাবস্থা নেবে।"
পাথরঘাটা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার দীপক কুমার বিশ্বাস বলেন, "বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে লিখতো অভিযোগ পেয়েছি। আমরা দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত অনুযায়ী ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।"
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান বলেন, "গতকাল একটি লিখতো অভিযোগ পেয়েছি, অভিযোগের বৃত্তিতে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে তদন্ত কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি যাচাই-বাচাই করে শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।"
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর