ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে এক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার যোগসাজশে সরকারি রবাদ্দের সার পাচারের অভিযোগ উঠেছে বিসিআইসি অনুমোদিত ডিলার রিফাত এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে। গত রবিবার বেলা ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। জানা যায়, উপজেলার রায়গ্রাম ইউনিয়নের বিসিআইসি অনুমোদিত সার ডিলার মেসার্স রিফাত এন্টারপ্রাইজ উচ্চ মূল্যে ইউরিয়া সার নিজ গোডাউন থেকে অন্যত্র বিক্রি করে দেয়। সে সময় ইউরিয়া সার নিয়ে আলম সাধু গাড়ি রওনা হলে স্থানীয় মানুষ গাড়িটি জব্দ করে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাকারিয়া মোহনের কাছে বুঝিয়ে দেয়। অভিযোগ উঠেছে, সেই সময় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সবাইকে আশ্বস্ত করে ঘটনাস্থল থেকে চলে যেতে বলেন এবং এর কিছু ক্ষণ পর গাড়িটি ছেড়ে দেন। ঘটনা সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

পরে ঘটনাস্থলে একাধিক গণমাধ্যম কর্মী উপস্থিত হয়ে কৃষি কর্মকর্তা জাকারিয়া মোহনের কাছে জানতে চাইলে প্রথমে তিনি অস্বীকার করেন। পরে তিনি বলেন, "আমি চা খেতে গিয়েছিলাম। এসে দেখি গাড়ি নেই।" ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "ফোনে টাকা নেই তাই জানাতে পারিনি।"

এর আগে গত ১৯ আগস্ট ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে রিফাত এন্টারপ্রাইজকে সার পাচারের অভিযোগে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহিন আলম। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফ্যাসিবাদী সরকারের বিনা ভোটের ৭ নং রায়গ্রাম ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপুর আস্থাভাজন হয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের সুযোগ-সুবিধা এবং সরকারি প্রণোদনার বীজ, সার ও অনুদানের টাকা অনৈতিক উপায় অবলম্বন করে চেয়ারম্যানের যোগসাজশে আত্মসাৎ করতেন। গত ৫ আগস্টের পরেও তিনি ভোল পাল্টালেও একই স্টাইলে করে চলেছেন অনিয়ম দুর্নীতি। সংশ্লিষ্ট দপ্তর তার অনিয়ম দুর্নীতির ব্যাপারে নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করে।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান মিয়া বলেন, "মেসার্স রিফাত এন্টারপ্রাইজকে অনিয়মের অভিযোগে এর আগে জরিমানা করা হয়েছিল। আজকের এই ঘটনা যদি সঠিক হয় তবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই।" ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ষষ্ঠি চন্দ্র রায় বলেন, "ব্যাপারটি এই মাত্র শুনলাম। ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম বলেন, "সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগের সত্যতা মিললে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"