• ঢাকা
  • ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৪ সেকেন্ড পূর্বে
কামরুজ্জামান জসিম
মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৬ আগস্ট, ২০২৫, ০৬:৩৭ বিকাল

লবণাক্ততার মোকাবিলায় উপকূলের ৭ হাজারেরও বেশি পরিবার পাচ্ছে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের ট্যাঙ্ক

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

উঠানে কংক্রিটের তৈরি গোলাকার ভিত, তার ওপরে বসানো প্লাস্টিকের ট্যাঙ্ক। ট্যাঙ্কের সঙ্গে টিনের চাল থেকে ঝুলানো পাইপ। বর্ষা এলেই চালের জল পাইপের মাধ্যমে চলে আসে ট্যাঙ্কে। বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা গ্রামের খালেক মল্লিকের বাড়িতে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়।

খালেক মল্লিকের গ্রামসহ উপজেলার প্রতিটি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে লবণাক্ততার কারণে সুপেয় জলের তীব্র সংকট রয়েছে। এই সংকট আরও প্রকট হয় শুষ্ক মৌসুমে, যখন এলাকা জুড়ে শুধু পানযোগ্য জল নয়, দৈনন্দিন কাজে ব্যবহারের জলেরও চরম সংকট দেখা দেয়। এই সংকট নিরসনে এলাকায় রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং সিস্টেম স্থাপনের উদ্যোগ নেয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। খালেক মল্লিক এই প্রতিবেদককে বলেন, "বছর জুড়ে এ অঞ্চলের সমস্যা নোনা জল।

এলাকায় বিশুদ্ধ জল পাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য। সুপেয় জলের একমাত্র উৎস হলো পুকুর, তবে সেটাও আগের মতো নেই। বর্তমানে ড্রামে করে দূর-দূরান্ত থেকে জল কিনে আনতে হয়। এর মধ্যে আশার কথা হচ্ছে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে বর্ষার জল সংরক্ষণের জন্য আমার বাড়িতে বিনামূল্যে একটি ট্যাঙ্ক স্থাপন করে দিয়েছে। ইতিমধ্যে ওই ট্যাঙ্কে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করেছি। আশা করি, বৃষ্টির দিন শেষ হলে বছরের বাকি সময় এখান থেকে সুপেয় জলের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।"

একই গ্রামের ইবনে সৈয়দ বাদশা জানান, তিনিও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল থেকে একটি ট্যাঙ্ক পেয়েছেন। তার ওই ট্যাঙ্ক কেনার সামর্থ্য ছিল না, তাই বছরের পর বছর বিশুদ্ধ জলের অভাবে লবণ জল পান করেছেন।

শুধু খালেক মল্লিক আর বাদশা নয়, উপকূলের মোংলা ও রামপাল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের অন্তত প্রায় ছয় হাজার পরিবার ‘উপকূলীয় জেলাগুলোতে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের মাধ্যমে নিরাপদ জল সরবরাহ প্রকল্প’-এর আওতায় এই ট্যাঙ্ক পেয়েছে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য ‘ট্রাস্ট ফান্ড’ থেকে ও ‘উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ’ নামে দুইটি প্রকল্পের মাধ্যমে মোংলা ও রামপালে মোট ৭ হাজার ৩৮৭টি জলের ট্যাঙ্ক স্থাপন করার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (বাগেরহাট) জয়ন্ত মল্লিক জানান, লবণাক্ততার কারণে সুপেয় জলের সবচেয়ে বড় সংকট তৈরি হয়েছে সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাটের উপজেলাগুলোতে। সরকারি দুইটি প্রকল্প জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে মোংলা ও রামপাল উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। ‘জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডে’ ১০ কোটি ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মোংলা ও রামপাল উপজেলায় ২ হাজার ট্যাঙ্ক স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পের কাজ ৭০ ভাগ শেষ হলেও মাত্র ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। তাই অল্প কিছু দিন কাজ সাময়িক স্থগিত ছিল। গত ১৮ আগস্ট আরও ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা অর্থ ছাড় দেয় জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড থেকে। তাই দ্রুত ট্যাঙ্ক স্থাপন কাজ চলছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ওই প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ রয়েছে। আশা করি, তার আগে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের রামপাল উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী ইমরান হোসেন ও মোংলা উপজেলা কার্য্যসহকারী আবদুর রাজ্জাক জানান, ‘উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ’ প্রকল্প নামে মোংলায় ১৭ কোটি ৭০ লক্ষ ১২ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪ হাজার ২৩টি ও রামপালে ৬ কোটি ১৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৩৬৪টি ট্যাঙ্ক স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। তবে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর মাসে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামিউল হক বলেন, "মোংলা ও রামপাল উপজেলার অধিকাংশ স্থানেই ভূগর্ভে পানযোগ্য জলের স্তর না পাওয়ায় গভীর নলকূপ চালু করা যায় না। অগভীর নলকূপের জলে রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত লবণাক্ততা। তাই এসব এলাকায় সুপেয় জলের অভাব সবসময় থাকে। এলাকার মানুষের জলের চাহিদা পূরণের জন্য রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং সিস্টেম হচ্ছে ভরসা। তাই আমরা আশা করব, সরকার এই উপকূলের মানুষদের বিশুদ্ধ জলের চাহিদা পূরণে আরও নতুন প্রকল্প বরাদ্দ দেবেন।"

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]