ইসরায়েলি সেনারা গাজার সবচেয়ে বড় শহর গাজা সিটির ভেতরে আরও গভীরে প্রবেশ করেছে। মঙ্গলবারের এই অভিযানে আবাসিক এলাকাগুলোতে তীব্র গোলাবর্ষণ চালানো হয়, যাতে বহু ফিলিস্তিনি নিহত ও আহত হয়েছেন। একই সঙ্গে হাজার হাজার মানুষ আবারও ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শহরের উত্তরাংশের আস-সাফতাওয়ি অঞ্চল থেকে দীর্ঘ মিছিল করে মানুষ পশ্চিম দিকে পালিয়ে যাচ্ছে। অনেকেই হাতে সন্তান ধরে বা ঠেলাগাড়িতে সামান্য মালপত্র নিয়ে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন।
আল-আহলি আরব হাসপাতাল জানিয়েছে, মঙ্গলবার শহরের একটি বাজারে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুইজন নারীও রয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, খাদ্য সংকট ও অপুষ্টির কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০৩ জনে, এর মধ্যে ১১৭ জন শিশু। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলেছে, গাজার বহু এলাকা এখন দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে, যা লাখো মানুষের জীবনের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করছে।
প্যালেস্টিনীয় সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, শুধু আগস্ট মাসেই গাজা সিটির জায়তুন ও সাবরা এলাকায় এক হাজারেরও বেশি ভবন সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে। অব্যাহত হামলা ও বোমাবর্ষণে হাসপাতাল ও ত্রাণকেন্দ্রগুলোতেও ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে। গত সপ্তাহে নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি ডাবল-ট্যাপ হামলায় চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন নিহত হন। এ ঘটনায় জাতিসংঘ ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক তদন্তের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়েছে।
অন্যদিকে ইসরায়েলের ভেতরে যুদ্ধবিরতি ও বন্দিদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলন জোরদার হচ্ছে। তেল আভিভসহ বিভিন্ন শহরে ‘ডে অব ডিসরাপশন’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজায় ইসরায়েলের অভিযান যতই তীব্র হচ্ছে, ততই আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে এবং মানবিক বিপর্যয় ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।
সর্বশেষ খবর