
দেশের মানুষের এবং রাজনৈতিক বৃহত্তর স্বার্থে আত্মপ্রকাশ করেছে বৃহত্তর সুন্নী জোট। রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের অডিটোরিয়ামে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) এর সমন্বয়ে গঠিত এই বৃহত্তর জোটের ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব অধ্যক্ষ আল্লামা স উ ম আবদুস সামাদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) অতিরিক্ত মহাসচিব মোহাম্মদ আসলাম হোসাইন এবং গণস্বাস্থ্য হোমিও-এর অধ্যক্ষ ও ক্যান্সার গবেষক ডা: সারোয়ার আলমসহ সারাদেশ থেকে আগত অনেক নেতৃবৃন্দ।
বৃহত্তর সুন্নী জোটের ২১ দফা ঘোষণাপত্র হলো:
১। ধর্মীয় মূল্যবোধ ও স্বাধীনতার চেতনার ভিত্তিতে ন্যায়ভিত্তিক, কল্যাণমুখী ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা।
২। শান্তিপূর্ণ ও অহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতি চর্চা এবং দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া।
৩। সুদমুক্ত, ন্যায্য ও উৎপাদনভিত্তিক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা।
৪। কৃষি, শিল্প ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা খাতকে রাষ্ট্রীয় সহায়তা দিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি।
৫। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বাজারদর স্থিতিশীলকরণে সিন্ডিকেট ও কালোবাজারি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা।
৬। জাতীয় সম্পদ গ্যাসসহ খনিজ সম্পদের যথাযথ ব্যবহার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
৭। বৈদেশিক কর্মসংস্থানের নতুন বাজার সৃষ্টি ও প্রবাসীদের স্বার্থ সংরক্ষণ।
৮। কুরআন-সুন্নাহর আলোকে যুগোপযোগী জাতীয় শিক্ষা নীতি প্রণয়ন। এছাড়া মাদরাসা, সাধারণ ও কারিগরি শিক্ষার মধ্যে সমন্বয় সাধন।
৯। মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মসংস্থানের পদক্ষেপ গ্রহণ।
১০। নারী ও শিশু অধিকার সুরক্ষা এবং মাদক, জুয়া ও অনৈতিক সংস্কৃতি নির্মূল করা।
১১। স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য, সুলভ ও সবার জন্য উন্মুক্ত করা।
১২। ইসলামী সংস্কৃতি, সাহিত্য ও মিডিয়া চর্চাকে উৎসাহিত করা।
১৩। সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।
১৪। মুসলিম দেশসমূহের সাথে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার করা এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সক্রিয় ভূমিকা রাখা।
১৫। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা।
১৬। প্রতিরক্ষা বাহিনী, পুলিশ, র্যাবসহ সকল সংস্থাকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা।
১৭। তথ্যপ্রযুক্তি, ফ্রিল্যান্সিং খাতে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।
১৮। খেলাধুলা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা বৃদ্ধি ও বিশ্বমঞ্চে প্রতিযোগিতা করার সুযোগ দেওয়া।
১৯। যুব সমাজকে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা। যুবদের মাদক, সন্ত্রাস ও বেকারত্ব থেকে দূরে রাখতে সৃজনশীল সূচি ও ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা।
২০। ধর্মীয় জীবনাচার মেনে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। নারীদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণ। নারী ও শিশুদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা, মাতৃত্বকালীন সুবিধা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। নারীদের জন্য সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ ও উদ্যোক্তা কার্যক্রম সম্প্রসারণ। নারীদের অনলাইন ব্যবসা ও ই-কমার্স খাতে রাষ্ট্রীয় প্রণোদনা ও টেকনিক্যাল সহায়তা প্রদান করা।
২১। শিক্ষাকে শতভাগ জাতীয়করণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
জোটের নেতৃবৃন্দ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, এই জোট জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ করবে এবং জাতীয় জীবনে স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। জোট গণমাধ্যম ও দেশবাসীর দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেছে।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর