৪ মাস ১৮ দিন পর ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ১৩টি দানবাক্স খুলে ৩২ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে।শনিবার (৩০ আগস্ট) সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে দানবাক্সগুলো খোলা হয়।
তবে প্রতিবার টাকা, স্বর্ণ-রুপার পাশাপাশি আলোচনায় থাকে মসজিদের দানবাক্সে পাওয়া চিঠি। এসব চিঠিতে লোকজন জীবনের প্রাপ্তি, বিরহ-বেদনা, আয়-উন্নতির ফরিয়াদ, চাকরির প্রত্যাশা, মনের মানুষকে কাছে পাওয়া, পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের আশা, রোগব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে আকুতি প্রকাশ করে থাকেন।
তেমনি আল্লাহর কাছে বিশেষ এক আকুতি জানিয়ে বেনামে এক চিঠি দিয়েছেন এক গ্রাম পুলিশ। চিঠিতে লেখা রয়েছে, ‘হে আল্লাহ, মালিক আমি একজন সাধারণ গ্রাম পুলিশ। আমার বেতন মাত্র .... টাকা। আল্লাহ তাও আমার আপনার দরবারে অর্থ সম্পদ টাকা পয়সা কোনো কিছুই চাওয়ার নাই। শুধু আপনার কাছে আমার একটাই দরখাস্ত। মালিক আপনি আমার ছেলেকে প্রতিবন্ধী বানিয়েছেন। মানুষের কোনো গুণাগুণ আল্লাহ আপনি তার মধ্যে দেন নাই।’
তিনি চিঠিতে আরও লিখেছেন, ‘আল্লাহ আমরা আর তার দেওয়া জ্বালা-যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছি না। অতি দুঃখের সাথে আপনার দরবারে ফরিয়াদ করছিগো মালিক, ...। আমিন।’
অন্য এক চিঠিতে অপর একজন লিখেছেন, ‘ভুল পথে আছি কিনা সঠিক পথে আছি জানি না। তুমি অন্তর্যামী। শুধু এইটুকু চাই যেই মানুষটাকে ৫ বছর ধরে ঠিক একইভাবে ফিল করে আসছি তাকে যদি তুমি আমার কপালে লিখে থাকো তবে খুব শিগগিরই কোনো সম্মানহানি না করে আমার করে দিও। নয়তো ভুলে যাওয়ার শক্তি দিও। আমিন।’ এমন অসংখ্য চিঠি নামে-বেনামে দানবাক্সে পাওয়া যায়।
টাকা গণনায় ৩৪০ জন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, জেলা প্রশাসনের ১৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৩৩ জন শিক্ষক ও স্টাফ, ৯ জন সেনা সদস্য, ৩০ জন পুলিশ সদস্য, পাঁচজন আনসার ব্যাটালিয়ান, ১০ জন আনসার সদস্য, ১০০ জন ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারী অংশ নেন। প্রতিবার তিন মাস পর খোলা হলেও এবার ৪ মাস ১৮ দিন পর খোলা হয়েছে।
দেশি টাকার পাশাপাশি সেখানে ছিল স্বর্ণালংকার ও বিদেশি মুদ্রাও। জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কড়া নিরাপত্তায় দানবাক্স খোলা হয়েছে। এ ছাড়াও সেনা, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা সার্বিক দায়িত্বে রয়েছেন।
সর্বশেষ খবর