• ঢাকা
  • ঢাকা, মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৭ সেকেন্ড পূর্বে
শাহীন মাহমুদ রাসেল
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৫:২৮ বিকাল

বাঁকখালীর জমি উদ্ধারের সময় দখলদারের হামলা, আটক ৩

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

কক্সবাজার শহরের প্রাণ কেন্দ্র কস্তুরাঘাটস্থ বাঁকখালী নদীর তীরে অবৈধভাবে দখল করে তৈরি স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান দ্বিতীয় দিনের মতো শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে অভিযানের শুরুতে অবৈধ দখলদারদের ছোঁড়া ইটের আঘাতে পুলিশের এক সদস্য আহত হয়েছে। এসময় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার শুরু হওয়া অভিযানে উচ্ছেদের পর স্থাপনার মালামাল ও ভরাট মাটি প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। যা সরিয়ে নিচ্ছে নিলামে অংশগ্রহণকারীরা।

মঙ্গলবার সকাল ১১টায় কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাট-খুরুশকূল সংযোগ ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অভিযান শুরু করতে গেলে দখলদাররা বাধা প্রদান করা। এসময় ছোঁড়া ইটের আঘাতে পুলিশের এক সদস্য আহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর থানার ওসি ইলিয়াস খান।

আহত পুলিশ কনেস্টেবল করিমকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আটকদের নাম ও পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ওসি ইলিয়াস খান বলেন, ‘বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিটিএ) কস্তুরাঘাট সংলগ্ন বাঁকখালী নদীর তীরে অবৈধভাবে গড়ে উঠা স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করে। প্রথমদিনে বেশ কিছু স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে দ্বিতীয় দিনের উচ্ছেদ শুরু করে। অভিযানে বিআইডব্লিউটিএ কর্মীদের পাশাপাশি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

এসময় অবৈধ দখলদারের লোকজন বাধা দেন। পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে দখলদারের একটি অংশ পিছন থেকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে পুলিশের এক সদস্যের ইটের আঘাতে মাথা ফেটে যায়। তাকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’

ঘটনার সময় হামলাকারীদের ধাওয়া দিয়ে পুলিশ ৩ জনকে আটক করে বলে জানান ওসি।

ওসি আরও জানান, ‘ঘটনার পর আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা কঠোর অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পাশাপাশি নদীর তীর দখল করে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. খায়রুজ্জামান জানান, ‘ইতোমধ্যে ৩ একরের বেশি জায়গা উচ্ছেদ করা হয়েছে। প্রথমদিন উচ্ছেদ হওয়া স্থাপনার মালামাল ও ওখানে ভরাট করা মাটি ১৫ ফুট পর্যন্ত প্রকাশ্য নিলামে দেয়া হয়েছে। ৬ লাখ টাকায় নেয়া নিলাম অংশগ্রহণকারী তা সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।’

বিআইডব্লিটিএ সূত্র জানিয়েছে, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে উৎপত্তি হয়ে ৮১ কিলোমিটারের বাঁকখালী নদীটি রামু ও কক্সবাজার সদর হয়ে শহরের কস্তুরাঘাট-নুনিয়াছটা দিয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। নুনিয়ারছড়া থেকে মাঝিরঘাট পর্যন্ত ছয় কিলোমিটারে সবচেয়ে বেশি দখলের ঘটনা ঘটেছে।

গত ১০ থেকে ১২ বছরে এই ছয় কিলোমিটারে ১ হাজারের বেশি অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। স্থানীয় ভূমি অফিস এবং বিআইডব্লিউটিএ যৌথভাবে বাঁকখালী নদীর অবৈধ দখলদারদের পৃথক তালিকা তৈরি করেছে। সহস্রাধিক অবৈধ দখলদার থাকলেও দুই তালিকায় স্থান পেয়েছে প্রায় সাড়ে ৩০০ জন প্রভাবশালী।

বিআইডব্লিউটিএ এর সূত্র মতে, ২০১০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার বিআইডব্লিউটিএ’কে বাঁকখালী নদীবন্দরের সংরক্ষক নিযুক্ত করে। প্রজ্ঞাপনে নদী তীরের ৭২১ একর জমি বিআইডব্লিউটিএ’কে বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশনা ছিল। জমি বুঝিয়ে দিতে বারবার জেলা প্রশাসনকে জানানো হলেও তারা তা দেয়নি। ফলে নদীবন্দর প্রতিষ্ঠা না হওয়ায় দখল অব্যাহত ছিল।

যার সূত্র ধরে ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ও ১ মার্চ যৌথ অভিযান চালিয়ে ৬ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জেলা প্রশাসন। তখন দখলমুক্ত করা হয় বাঁকখালী নদীর ৩০০ একরের বেশি প্যারাবনের জমি। কিন্তু পরে তা আবারও দখল হয়ে যায়। উচ্ছেদ করা প্যারাভূমিতে ফের নির্মিত হয়েছে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি, দোকানপাটসহ নানা স্থাপনা।

এর মধ্যে বাঁকখালী নদীর সীমানায় থাকা সব দখলদারের তালিকা তৈরি করে আগামী চার মাসের মধ্যে উচ্ছেদ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে গত ২৪ আগস্ট সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

মামলার রায়ে বলা হয়, কক্সবাজারে বাঁকখালী নদীর বর্তমান প্রবাহ এবং আরএস জরিপের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণপূর্বক নদীটিকে সংরক্ষণ করতে হবে। এছাড়া নদীর সীমানায় থাকা সব দখলদারের তালিকা তৈরি করে আগামী চার মাসের মধ্যে উচ্ছেদ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

যার সূত্র ধরে শনিবার কক্সবাজার সফরে আসেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি কক্সবাজার হিলটপ সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে হাইকোর্টের আদেশ মোতাবেক বাঁকখালী নদী দূষণ ও দখলমুক্তকরণের লক্ষ্যে বিশেষ সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন। সভা শেষে তিনি কথা বলেন সাংবাদিকদের সাথে।

এসময় তিনি কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর দখলদারদের সমন্বিত তালিকা করে উচ্ছেদ করা হবে বলে জানান। যার সূত্র ধরেই সোমবার শুরু হয়েছে উচ্ছেদ অভিযান।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শুরু হওয়া উচ্ছেদ অভিযানে নদী সকল দখল করে নির্মিত সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। এরপর নদীর সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।’

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com