
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড এলাকায় টমটম ও সিএনজি ভাড়া নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন নিহত ও অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় যৌথবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের জামারগাঁও, রাধাপুর গ্রামের ব্যবসায়ী ফয়সল আহমদের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী কাকুড়া করিমপুর গ্রামের টমটম চালক রাশেদ, সিএনজি চালক মোহাম্মদ আলী ও সিরাজুলের টমটম ভাড়া নিয়ে গত সোমবার রাত ১০টায় কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এর জেরে মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় রাধাপুর ও করিমপুর গ্রামের মানুষ মাইকিং করে প্রস্তুতি নিয়ে কাকুড়া ও করিমপুর গ্রামের কাছে এলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করে। এতে উভয় পক্ষের ৫০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে ২০ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে রাধাপুর জামারগাঁও গ্রামের লোকজন দৌড়ে পালিয়ে গেলে, পিছনে একা পড়ে যান রাধাপুর গ্রামের আব্দুর রউফের ছেলে সাব্বির মিয়া (৩৫)। তাকে একা পেয়ে অপর পক্ষের লোকজন ঘিরে ধরে এলোপাতাড়ি দায়ের কোপে মারাত্মক আহত করে। কিছুক্ষণ পরেই তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাকুড়া করিমপুর গ্রামের লোকজনের সাথে স্থানীয় বিবিয়ানা চৌরাস্তায় টমটম ও সিএনজি চলাচল নিয়ে গত ১৫-২০ দিন যাবৎ উত্তেজনা চলে আসছিল। কাকুড়া করিমপুর গ্রামের পক্ষে নেতৃত্ব দেন মাখন মিয়া ও ইলিয়াস মিয়া গংরা। অপর পক্ষে রাধাপুর, জামারগাঁও গ্রামের নেতৃত্ব দেন সাবেক মেম্বার আব্দুল বারিক রনি ও ফখরুল ইসলাম গংরা।
সাবেক মেম্বার ফখরুল ইসলাম বলেন, "আমাদের কয়েকটি গ্রামের মানুষকে কয়েকদিন যাবৎ কাকুড়া করিমপুরের লোকজন পেলেই মারপিট করছে। গতকাল রাতে ফয়সল আহমদ নামে একজন ব্যবসায়ীকে তারা মারপিট করে টাকা লুটপাট করে, এ নিয়ে আমরা প্রতিবাদ করেছি। তারা আমাদের গ্রামের কৃষক সাব্বিরকে একা পেয়ে মারপিট করে নিহত করেছে।"
এ ব্যাপারে কাকুড়া গ্রামের মাখন মিয়ার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "আমাদের গ্রামের টমটম চালক রাশেদ, সিএনজি চালক মোহাম্মদ আলীকে রাধাপুর ও জামারগাঁও গ্রামের লোকজন মারপিট করেছে। আজকে (মঙ্গলবার) সকালে আমাদের গ্রামে এসে লাঠিসোঁটা নিয়ে আক্রমণ করেন। এ নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে।"
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, "ঘটনার তদন্ত চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং পুরো বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।"
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর