
টানা চৌদ্দ মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন অল্টারনেটিভ মেডিকেল কেয়ার (এএমসি) প্রকল্পে নিয়োগপ্রাপ্ত সকল চিকিৎসক এবং শিক্ষকরা। গতকাল রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, অল্টারনেটিভ মেডিকেল কেয়ার (এএমসি) প্রকল্পে নিয়োগপ্রাপ্ত দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ, সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজের শিক্ষক এবং চিকিৎসকদের বেতন গত জুলাই ২০২৪ সাল থেকে অর্থাৎ ১৫ মাস বন্ধ রয়েছে। চতুর্থ সেক্টর প্রোগ্রামের এএমসি প্রকল্পের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত এই সকল শিক্ষক এবং চিকিৎসকদের বেতন বন্ধ থাকলেও অদ্যাবধি অত্যন্ত দায়িত্বশীলভাবে শিক্ষা এবং চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন তাঁরা।
বক্তারা আরও জানান, বর্তমান সরকার অপারেশন প্ল্যান বন্ধ করে দুই বছরের জন্য একটি ডিপিসি চালু করে এক্সিট চান্স চালু করার প্রক্রিয়া শুরু করেন। সরকারের প্রতিশ্রুতি এবং স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছিল, অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প দ্রুত রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করা হবে। সেই লক্ষ্যে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে আন্তরিকতার মাধ্যমে তাঁরা নিয়মিতভাবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন। সম্প্রতি সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সভায় এসি সহ সকল অপারেশন প্ল্যানের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের ক্যারিড ওভার না করে তাদের আউটসোর্সিং হিসেবে সুপারিশ করা হয়, যা অত্যন্ত অপমানজনক এবং অসম্মানের।
তাঁরা দাবি করেন, লিখিত, মৌখিক এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁরা নিয়োগ পেয়েছেন। ২০১৪ সাল থেকে অদ্যাবধি অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। যেখানে সরকার এবং সরকারের স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তাঁদের চাকরি ক্যারিড ওভার করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করা সমীচীন বলে তাঁরা মনে করেন। দীর্ঘ দিন বেতন বন্ধ থাকায় এএমসি প্রকল্পের নিয়োগপ্রাপ্ত ৩৫৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আজ চরম হতাশায় জীবন যাপন করছেন।
বক্তারা বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে এবং আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক চিকিৎসা হিসেবে হোমিওপ্যাথিক, ইউনানি এবং আয়ুর্বেদিক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পৃথিবীর অনেক দেশে বিকল্প চিকিৎসা হিসেবে হোমিওপ্যাথিক, ইউনানি এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার গুরুত্ব অপরিসীম। দেশে প্রায় তিন হাজার গ্র্যাজুয়েট হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক, পনেরো শত জন গ্র্যাজুয়েট ইউনানি চিকিৎসক এবং প্রায় পনেরো শত জন আয়ুর্বেদিক গ্র্যাজুয়েট চিকিৎসক রয়েছেন। ইতিমধ্যে এএমসি প্রকল্পের ৪৫ জন মেডিকেল অফিসার, ৬৪ জন কম্পাউন্ডার এবং ৪৮৭ জন হার্বাল অ্যাসিস্ট্যান্টকে প্রকল্প থেকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করা হয়েছে। তাঁরা মনে করেন, দেশের জনগণের চাহিদাসম্পন্ন এই তিন চিকিৎসা পদ্ধতির নিয়োগপ্রাপ্ত ৩৫৪ জন মেডিকেল অফিসার (হোমিওপ্যাথিক, ইউনানি এবং আয়ুর্বেদিক)-দের প্রাপ্য ১৪ মাসের বকেয়া বেতন দ্রুত প্রদান, প্রকল্পের জনবল ক্যারিড ওভার এবং এই জনবলকে দ্রুত রাজস্ব খাতে স্থানান্তর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই মানববন্ধনে জনগুরুত্বপূর্ণ এই অধিকার আদায়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন এএমসি প্রকল্পের নিয়োগপ্রাপ্ত ৬৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পক্ষে ফোকাল পার্সন এএমসি মির্জাপুরুর রহমান লিটন এবং সমন্বয়ক ড. মোস্তাফিজুর রহমান সোহাগ।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর