কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার গোমতী নদীর ওপর নির্মিত কংশনগর ব্রিজটি বর্তমানে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রায় ২৩ বছর আগে নির্মিত এই ব্রিজটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন ও হাজারো মানুষ চলাচল করে। তবে দীর্ঘদিনের রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং অতিরিক্ত ভারী যান চলাচলের কারণে ব্রিজটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সোমবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, ভারেল্লা উত্তর ইউনিয়নের কংশনগর হয়ে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই ব্রিজে একাধিক স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। দিন-রাত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন ও পথচারীরা চলাচল করছে।
স্থানীয়রা জানান, কংশনগর ব্রিজের পূর্বপাশের দুই তীর ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড আগে সিমেন্ট ব্লক বসিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে একটি প্রভাবশালী চক্র ব্রিজ সংলগ্ন নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করে। এলাকাবাসীর প্রতিবাদ ও অভিযোগ সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে নদীতীর ভাঙন শুরু হয় এবং বাঁধের নিচের অংশ ভেঙে ব্লকগুলো তলিয়ে যায়।
মনোহরপুর গ্রামের বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম নোমান ও কংশনগর বাজারের ব্যবসায়ী মো. বাদল বলেন, একসময় এই নদী পারাপারে মানুষকে খেয়া নৌকার ওপর নির্ভর করতে হতো। যোগাযোগ সহজ করার জন্য ২০০৩ সালে এই ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বর্তমানে বহনক্ষমতার অতিরিক্ত ভারী ট্রাক, বিশেষ করে বালুবাহী ট্রাক চলাচলের কারণে ব্রিজটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে মাঝখানের একটি পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন শত শত যানবাহন এই ব্রিজ ব্যবহার করায় যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
স্থানীয়দের দাবি, অচিরেই কংশনগর ব্রিজ সংস্কার না করলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে এই অঞ্চলের হাজারো মানুষের জীবন প্রতিদিন ঝুঁকির মধ্যে থাকবে।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হোসেন বলেন, "ব্রিজটির ঝুঁকির বিষয়টি গত রাতে অবগত হয়েছি। এটি নির্মাণ করেছিল রুটস ইন হাইওয়ে। ইতিমধ্যে দ্রুত সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ভারী যান চলাচল বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর