
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ছাত্রলীগ কর্মী সাব্বির হোসেন (২০) হত্যা মামলায় ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে সিরাজগঞ্জ জেলা ও অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত। এই রায়ে হতাশা প্রকাশ করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করে সংবাদ সম্মেলন করেছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ২ আসামির পরিবারের সদস্যরা।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) পৌর সদরের মনিরামপুর বাজারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. আ. সামাদ ও মো. ইদ্রিস আলীকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করে লিখিত বক্তব্য পাঠ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মো. ইমরান আলী জানান, ২০১২ সালের ২৩ আগস্ট ওয়াজ আলীর মেয়ে শিউলীর সঙ্গে মোবাইলে কথা বলাকে কেন্দ্র করে গ্রামের দুই পক্ষের মারামারিতে ছাত্রলীগ কর্মী সাব্বির হোসেন নিহত হন। কিন্তু ঘটনার দিন তাঁর বাবা পার্শ্ববর্তী জেলা পাবনায় আত্মীয়ের বাড়িতে অবস্থান করলেও মো. আ. সামাদ বিএনপির পোতাজিয়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের সভাপতি হওয়ায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাঁকে সাব্বির হত্যা মামলার ২৭ নং আসামি করা হয়। শুধুমাত্র বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় তৎকালীন সময়ে প্রতিপক্ষ প্রভাব বিস্তার করে উপস্থিত সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ না করে ভুয়া সাক্ষীদের সাক্ষ্য নিয়ে তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা চার্জশিট আদালতে প্রেরণ করেন। এরপর ওই সাক্ষীরা বিবাদীদের সঙ্গে কথা বলার সময় আবদুস সামাদের ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকার কথা স্বীকার করলেও আদালতে পরিকল্পিতভাবে বানোয়াট সাক্ষ্য দেয়।
অপরদিকে মো. নাজমুল হোসেন বলেন, তাঁর বাবা মো. ইদ্রিস আলী শাহজাদপুর মওলানা ছাইফ উদ্দিন এহিয়া ডিগ্রি কলেজের পিয়ন পদে কর্মরত আছেন। প্রতিদিনের ন্যায় ঘটনার দিনও তিনি সকালে কলেজের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান এবং সেদিন তিনি কলেজে উপস্থিত ছিলেন, যা উক্ত তারিখের কলেজ কর্মচারী হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর আছে। তারপরও ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের হওয়ায় তাঁকে সাব্বির হত্যা মামলায় ৬ নং আসামি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির দুই ছেলে আরও বলেন, ছাত্রলীগকর্মী সাব্বির হত্যার রায়ে দুজন নির্দোষকে ফাঁসিয়ে দেওয়ায় ন্যায়বিচারের জন্য উচ্চ আদালতে আপিল করার প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনার সময় উপস্থিত সাক্ষীদের সাক্ষ্য নিয়ে মামলা পুনঃতদন্ত করে উচ্চ আদালতের মাধ্যমে তাঁরা ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন।
উল্লেখ্য, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে পোতাজিয়ায় ছাত্রলীগকর্মী সাব্বির হত্যা মামলায় ১৩ বছর পর ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও একই মামলায় আরও আট আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও অর্থদণ্ড প্রদান করে আদালত। গত ২৪ আগস্ট সিরাজগঞ্জ জেলা ও অতিরিক্ত দায়রা জজ-২ আদালতের বিচারক কানিজ ফাতেমা এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন—শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া গ্রামের ওয়াজ আলী, তাঁর ছেলে সেলিম রেজা, কুন্নু, হামিদ এবং তাঁর ভাই আরশেদ আলী।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর